নওগাঁয় কৃষি প্রণোদনার টাকা দিতে ব্যাংকের অনীহা, কৃষকের ভোগান্তি
                                
করোনা ভাইরাসের কারনে কৃষিক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের বিশেষ প্রণোদনাপ্রাপ্ত একজন গ্রাহককে ঋণের বরাদ্দকৃত অর্থ বিতরণে এক্সিম ব্যাংক নওগাঁ শাখা ব্যাপক হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঋণ মঞ্জুরীর ২ মাস অতিবাহিত হলেও বরাদ্দকৃত টাকা প্রদান করা হয়নি।
জানা গেছে, নওগাঁ’র এস আর মৎস্য খামারের মালিক মোঃ সাইদুর রহমান দুবলহাটির একজন মৎস্য খামারী। তিনি মৎস্য হ্যাচারীতে রেনুপোনা উৎপাদন ও পুকুরে মৎস্য চাষের পাশাপাশি গবাদিপশু প্রতিপালন করে থাকেন।
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী তিনি গত ৭ সেপ্টেম্বর এক্সিম ব্যাংক নওগাঁ শাখায় প্রনোদনা ঋণ পাওয়ার আবেদন করেন। সিকিউরিটিস্বরুপ ১ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা মুল্যের সম্পত্তির দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্র দাখিল করেন। যাচাই বাছাই অন্তে গত ২১শে সেপ্টেম্বর এক্সিম ব্যাংক প্রধান দপ্তর সাইদুর রহমানের এস আর মৎস্য খামারের অনুকুলে কৃষি প্রনোদনা ঋণ হিসেবে ১৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুরী প্রদান করে।
এই মঞ্জুরীর প্রেক্ষিতে এক্সিম ব্যাংক নওগাঁ শাখা’র পত্র নম্বর এক্সিম/নওগাঁ/আইএনভি/২০২০/৯৭১ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর মোতাবেক একটি মঞ্জুরীপত্র প্রদান করা হয়। মোট ১২টি শর্ত পূরণ করে সাইদুর রহমানের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁর হিসাব নং ০৯১১১১০০০৩৪৬৮১ থেকে ফারদার চার্জ হিসেবে ১ হাজার টাকা এবং ষ্ট্যাম্প খরচ বাবদ আরও ৩শ টাকা সমন্বয় করা হয়েছে। সবগুলো টার্মস এবং কন্ডিশন পূর্ণ হওয়ায় ২৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত শাখা ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা এই ড্রিল সম্পন্ন করবেন বলে জানিয়ে দেন।
কিন্তু পরবর্তীতে রহস্যজনকভাবে এই ড্রিল সম্পন্ন করা হয় না। সাইদুর রহমানকে দিনের পর দিন ঘুরানো হচ্ছে। অথচ মঞ্জুরীপত্রে উল্লেখ রয়েছে মঞ্জুর হওয়ার পর থেকে ৬০ দিনের মধ্যে যদি ড্রিল সম্পন্ন না হয় তাহলে মঞ্জুরীপত্র বাতিল হয়ে যাবে। মঞ্জুরী’র তারিখ গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ২৩ নভেম্বর এই ৬০ দিন শেষ হয়ে যাবে।
কাজেই সাইদুর রহমানের প্রনোদনা প্রাপ্তি নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অপরদিকে সময়মত উপযুক্ত পরিমান খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী যোগান না দিলে ব্যবসার অপুরনীয় ক্ষতি সাধিত হবে। সে ক্ষেত্রে সরকারের দেয়া এই প্রনোদনা তাঁর কোন কাজেই আসবে না।
দিনের পার দিন ব্যাংকে গেলেও প্রণোদনার টাকা উঠাতে না পেরে সাইদুর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং এক্সিম ব্যাংকের প্রধান দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এক্সিম ব্যাংক নওগাঁ শাখার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা এ ব্যাপারে বলেছেন, ব্যবস্থাপক অসুস্থতাজনিত কারনে ছুটিতে থাকায় প্রনোদনার টাকা বরাদ্দ দিতে বিলম্ব হচ্ছে। বরাদ্দকৃত অর্থ বিতরণ করা হবে। কোন অসুবিধা নাই।
উল্লেখ্য, ব্যাবস্থাপক ছুটিতে থাকাকালীন ওই মঞ্জুরীপত্রে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক হিসেবে সেলিম রেজা নিজেই স্বাক্ষর করেন। তাহলে টাকা বরাদ্দের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপকের অনুপস্থিতি অন্তরায় কেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আরপি/এমএইচ

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: