রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


নওগাঁর মহাদেবপুরে

কৃষি কার্ড না থাকায় সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হাজারো কৃষক


প্রকাশিত:
২৩ জুলাই ২০২০ ০২:৪৭

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:১৫

ফাইল ছবি

শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা। প্রতি বছর এ উপজেলায় প্রায় ৩৭ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়ে থাকে। যা স্থানীয় খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে সরবরাহ করা হয় এবং এখানে উৎপাদিত চিনি আতপ চাল বিশ্ববাজারে রফতানি হয়ে থাকে। কৃষি উপকরণসহ সব ধরনের সরকারি সুবিধা পেতে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড চালু করে কৃষি মন্ত্রনালয়। ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও মাঝারি ধরনের কৃষক এই কার্ডের মাধ্যমে সরকারি সহায়তা পান।

২০১৪ সালে সর্বশেষ কৃষি কার্ড হালনাগাদ করা হয়। আর এ কার্ড করা থেকে বাদ পড়েছেন উপজেলার হাজারো কৃষক। কৃষি কার্ড না থাকায় সরকারি গুদামে কৃষকরা ধান বিক্রি করতে পারছেন না। কৃষি কার্ড হালনাগাদ না হওয়ায় সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। কৃষি কার্ড হালনাগাদের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় হাজারো কৃষক।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কৃষি মন্ত্রনালয় থেকে ২০০৯ সালে কৃষকদের সুবিধার জন্য কৃষি কার্ড চালু করা হয়। এরপর ২০১৪ সালে সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়। উপজেলায় মোট কৃষক পরিবার আছে ৭৬ হাজার ৮৯টি। কার্ডধারী কৃষকের সংখ্যা ৬৮ হাজার ৬৮৬ জন। কার্ড পাওয়া থেকে বাদ পড়েছেন ৭ হাজার ৪১২ জন কৃষক। গত বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন। এ উপজেলায় ২৬ টাকা কেজি দরে সরকার ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করছেন।

জানা গেছে, বিনামূল্যে সার, বীজ ও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ এবং কৃষি ঋণ প্রদানে ব্যবহৃত হয়ে থাকে কৃষি কার্ড। কৃষকদের কৃষি কার্ড দিয়ে ১০ টাকায় সোনালী ব্যাংকে হিসাব খোলা যায়। কৃষি বিষয়ে সুবিধা পেতে হলে এই কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক। বর্তমানে কৃষি কার্ড না থাকায় সরকারি মূল্যে গুদামে ধান বিক্রি করতে পারছেন না শত শত কৃষক।

কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাঁর সাড়ে তিন বিঘা জমি আছে। বোরো মৌসুমে জমিতে প্রায় ৬০ মণ জিরাশাইল ধানের আবাদ হয়েছে। কৃষি কার্ড না থাকায় তিনি গুদামে ধান দিতে পারছেন না। ফলে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কৃষক লোকমান হাকিম বলেন, নিজের জমি আছে ১৫ কাঠা। প্রতি বছর ৩-৪ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করেন। বোরো মৌসুমে ৭০ মন ধান পেয়েছি। যদি কৃষি কার্ড থাকতো তাহলে গুদামে ধান দিয়ে লাভবান হতে পারতাম।

তিনি আরও বলেন, আমরা ক্ষুদ্র কৃষক। সরকারি সুযোগ সুবিধা ও প্রণোদনা পাওয়া থেকে বাদ পড়ছি। নতুন করে কৃষি কার্ডের জন্য তালিকা হালনাগাদ করা হোক।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, কৃষি কার্ড না থাকায় কৃষক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকার যদি মনে করেন, তাহলে আবার নতুন করে কৃষকদের তালিকা করে কৃষি কার্ড দেয়া শুরু করবেন। তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে নতুন করে কৃষকদের কৃষি কার্ডের তালিকা করা বন্ধ আছে। যারা এখনো কার্ড পাননি নতুন কৃষক হয়েছেন; তাদেরও কৃষি কার্ড পাওয়ার অধিকার আছে। তবে নতুন করে আবার কবে কৃষকদের কৃষি কার্ডের তালিকা করা হবে তা তিনি বলতে পারবেন না।

 

আরপি/আআ-১১



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top