রাজশাহী শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


জলভরা মাঠে মাছ ধরার উৎসবে মেতেছে শিশুরা


প্রকাশিত:
২৪ জুলাই ২০২০ ০৪:০১

আপডেট:
২৪ জুলাই ২০২০ ০৪:০৩

মাছ ধরার উৎসবে মেতেছে শিশুরা। ছবি: সংবাদদাতা

প্রকৃতিতে এখন চলছে পুরোদমে বর্ষাকাল। ঘন ঘন মেঘের বর্ষনে মাঠঘাট পথ প্রান্তর উপচেপরা জলে ভরে গেছে। এসময় আদিকাল থেকেই গ্রামের রুপ বৈচিত্রে জলভরা মাঠে শুরু হয় মাছ ধরার মহা উৎসব। গ্রামে মাছ ধরার এমন উৎসবে বড়োদের পাশাপাশি থেমেনেই শিশুরাও।

করোনাকালে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশুরা বাবা-মার সাথে একরকম ঘর বন্দী হলেও বর্ষাকালে গ্রামে দেখা গেছে এর ভিন্ন চিত্র। জলভরা মাঠে মাছ ধরার উৎসবে থেমেনেই শিশুরাও। বাবা-মার চোখ ফাঁকি দিয়ে কজন বন্ধু মিলে কারো হাতে ভাঙ্গা থালা, মাছ রাখার জন্য পুরোনো বদনা আর খৈচালা নিয়ে দে-দৌড়। তারপর কোদালের কোপে কাদামাটি হাতে নিয়ে ছোট নালা জল ভরা মাঠের মাঝামাঝি আইল বাঁধতে দেখা যায়। আইল বাধা মাটির উঁচু ঢিবিতে বাঁশের তৈরি খৈচালা হাতেনিয়ে একজন দাঁড়িয়ে আর দুজন থালা হাতে পানি সিচছে। একসময় মাঠের পানি কমতে থাকায় আটকে পরা মাছের নৃত্যের সাথে সাথে ওদের বাধ ভাঙ্গা আনন্দ চোখে পরার মত।

এসময় মাছ ধরতে গিয়ে রুমানা মাঠের মাঝখানে কাদামাটিতে পরে গেলে ছোট ভাই ফরিদ কাদামাটি হাতে নিয়ে রোমানার গায়ে ফেলে দিলে একের পর এক সবায় মিলে এর ওঁর গা মাখাতে লাগলে হারিয়ে যাওয়া শৈশবের অনাবিল স্মৃতি চিহ্ন ফুটে ওঠে। তারপর পালা বদল করে মাঠের পানি কমানোর (সেচের) কাজ শুরু হয়। একসময় সব পানি কমে গেলে মাঠে আটকে পড়া ডাঁরকা, সরপুটি, চেং, ভ্রুকুটি, শৌল আর ছোট ছোট কৈ মাছের নৃত্যে ওদের মাঝে জেগে ওঠে বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ।

সব শেষে বদনায় রাখা মাছে ভরে গেলে একজন চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে ”অনেক মাছ পাইছিরে চল এবার হামরা ভুলকাভাতি খামো।” অতঃপর তারা একে অপরকে বলতে থাকে কেউ চেং মাছ নেবে কেউ ভ্রুকুটি আবার কেউ কেউ ডাঁরকা, শরপুঁটি, কৈ মাছ ইত্যাদি।

ওদের মধ্যে সবার ছোট বেলাল ভয়ে ভয়ে বলে ওঠে ” কাদোমাটিত সবার জামা গাও মাখে গেছে রে দেখিস বাড়িত গেলে তোর মাও ছুটাবে। আগে পকরত ডুবপারে তারপর বাড়িত যামো চলো।” তারপর ওদের মতোকরে একে একে সবায় চলে যায়। আদিকাল থেকে গ্রামের রুপ বৈচিত্রে জলভরা মাঠে বড়োদের পশাপাশি শিশুদের মাঝে মাছ ধরার এমন উৎসব গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস ঐতিহ্যকেই স্বরণ করে দেয়।

 

আরপি/আআ-০৪

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top