খেলার মাঠে বানানো হয়েছে গর্ত ঝুঁকিতে আষাড়িয়াদহর দুই বিদ্যালয়

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কানাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে খেলার মাঠ থেকে মাটি খুড়ে গর্ত করায় বিদ্যালয়ের দুটি ভবন ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ভবনের পাশে খনন করা গর্তে পানি জমেছে। যা স্কুলের বাচ্চাদের জন্য ঝুঁকির কারণ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০-২৫ দিন আগে বিদ্যালয় সংলগ্ন খেলার মাঠের মাটি কেটে অন্যত্র ফেলা হয়। স্থানীয় প্রতিনিধি চেয়ারম্যান, ইউএনও দাঁড়িয়ে থেকে স্কুলের মাঠ থেকে মাটি তুলে স্কুলের আরেকটি খাল ভরাট করেছেন। এতে স্কুলের মাঠে ১২-১৫ ফুট গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সেই গর্ত এখন পুকুরে রূপ নিয়েছে। এর ফলে চারপাশের মাটি ধসে পড়ছে এবং সরকারের অর্থায়নে নির্মিত বিদ্যালয়ের দুটি ভবন ঝুঁকিতে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আঙ্গুর হোসেন বলেন, হঠাৎ করে এখানে এত বড় গর্ত খোঁড়া হলো কেন, মানুষ কিছুই জানে না। স্কুলের বাচ্চারা যেকোনো সময় পড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দুই স্কুলের পাশে এই খনন কাজ অত্যন্ত বিপদজনক। আমরা চাই, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক।
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব শামিম বলেন, গভীর সেই গর্তে ইতোমধ্যে দুই শিশু পড়ে গিয়ে মৃত্যুমুখে পড়েছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় প্রাণে রক্ষা পেলেও ভবিষ্যতে বড় ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের দুটি ভবনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
চর আষাড়িয়াদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফতাব উদ্দিন বলেন, আমি ইউএনও স্যারকে বলেছিলাম এখান থেকে মাটি না তুলে অন্য জায়গা থেকে মাটি আনলে ভালো হয়। তখন তিনি আমাকে বলেন, আমি এখানে পরবর্তীতে মাটি ভরাট করে দিবো।
চর আষাড়িয়াদহ কানাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর আলী বলেন, আমাকে চেয়ারম্যান সাহেব বলেছেন সরকারি কাজের জন্য এখানে মাটি তোলা লাগবে, আমি তাকে বলেছিলাম এখান থেকে না নিয়ে অন্য জায়গা থেকে ব্যবস্থা করার জন্য। তবে তিনি আমার কথা শুনেননি। তিনি ইউএনও মহোদয়ের কথা বলে এখান থেকে মাটি তোলার কথা বলেছেন। তিনি এখান থেকে মাটি তুলেছেন, আর প্রথমে আমি জানতাম জায়গাটা গভীর কম হবে কিন্তু পরে দেখলাম জায়গাটা বেশি গভীরতা হয়ে গেছে যার ফলে আমার প্রতিষ্ঠান একটু হলেও বিপদজনক অবস্থায় আছে।
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফুল ইসলাম (ভোলা) বলেন, আমরা স্কুলের জায়গাতে শিশু পার্ক করব সেজন্য মাটি পাচ্ছিনা বন্যার কারণে। সেজন্য স্কুলের ওই জায়গা খুঁড়ে সেখানে মাটি দিয়েছি। স্কুলের শিক্ষদের সাথে আলোচনা করে সেখান থেকে মাটি তুলেছি। আমরা এটা বন্ধ করে দিবো, এজন্য আমরা তো অঙ্গীকারবদ্ধ।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমরা সেখানে ইউনিয়নের শিশু মিনি পার্ক করব। আমরা জায়গা সিলেক্ট করেছি স্কুলের পাশে। বর্ষার জন্য মাটি পাচ্ছি না। সেজন্য আমরা সেখান থেকে মাটি তুলে এ পাশে নিয়েছি। আমরা যখন প্রকল্প নিয়ে যাবো তখন সেখানে ভরাট করে দিবো। চেয়ারম্যান সাহেবকে বলেছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
আরপি/আআ
বিষয়: রাজশাহীর গোদাগাড়ী
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: