রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


মহাদেবপুরে দুই বালু ব্যবসায়ীর ফাঁস : এলাকায় তোলপাড়


প্রকাশিত:
১১ অক্টোবর ২০২০ ০৪:১০

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৫৬

নওগাঁর মহাদেবপুরে দুই বালু ব্যবসায়ীর ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত ২ বৈশাখ ওই ফোনালাপে তারা মহাদেবপুর বালু মহালের লিজের সময় কিভাবে সর্বোচ্চ দরদাতা মো: মাসুদুর রহমানকে বাদ দিয়ে দ্বিতীয় দরদাতা হিসাবে মো: সাঈদ হাসান ওরফে সাকিল তরফদারের নামে লিজ দেয়া হয় সে সম্পর্কে আলাপ করা হয়।

ফোনালাপে বলা হয়, কখন কি হবে তা তারা সব জানতেন। এতে স্পষ্ট হয় যে, পুরো ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। মাসুদুর রহমান সর্বোচ্চ এক কোটি ৬২ লাখ টাকার দরপত্র দাখিল করলেও তাতে ঘষামাজা করার অভিযোগে তার দরপত্র বাতিল করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এব্যাপারে বিশেষজ্ঞ মতামত পাবার পরই সে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়। ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য ওই দরপত্র জরুরী ম্যাসেঞ্জার দিয়ে ঢাকায় এক্সপার্টে পাঠানো হয়। সেখানে একজন উচ্চ পদস্থ ব্যক্তির আত্মীয় রয়েছেন। তিনি বলেছেন, রিপোর্ট পক্ষে না আসলেও পক্ষে করে দেয়া হবে।

ফোনালাপে বলা হয়, প্রথমে মাসুদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হবে। পরে তাকে রিম্যান্ডে নিয়ে মর্জিনা ও কামালের জড়িত থাকার কথা বের করে তাদেরকেও আটক করা হবে।
প্রায় ২৭ মিনিটের ফোনালাপে বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন জনকে মোটা অংকের টাকা দেয়ার কথা তাদের নাম উল্লেখ করে প্রত্যেকের টাকার পরিমাণও বলা হয়েছে।

প্রায় একমাস ধরে ওই অডিও ক্লিপ বিভিন্ন ফেইসবুক আইডি, ম্যাসেঞ্জার ও নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত ফোনালাপকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

প্রাথমিকভাবে ওই দুই ফোনালাপকারীর একজন মহাদেবপুরের বালু ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান ও অপরজন মান্দার বালু ব্যবসায়ী জুয়েল বলে পরিচিতজনেরা মনে করছেন। ফোনালাপ ফাঁসের পর থেকেই মান্নান পলাতক রয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার গ্রামের বাড়ি গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মান্দার জুয়েল জানান, অনেকের সাথেই বালু বিষয়ে কথা হয়। তবে বিতর্কিত ফোনালাপটি তার কিনা তা তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। ফোনালাপে মান্নান পুরো ঘটনা জুয়েলকে বলেছেন। তাই নিজের কথা নিজে কখনো ফাঁস করতে পারেনা। জুয়েলের ফোন থেকে তা ফাঁস হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।

এই ফোনালাপে সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে টাকা দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন ঘটনার বিববরণ দানকারী মান্নান। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয় কিনা সেই ভয়ে তিনি পালিয়ে আছেন বলে এলাকাবাসী মনে করছেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের আওতায় আসে কিনা সেই ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউই। তবে ফোনালাপটি শুনে সবার মনেই বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

মাসুদুর রহমান মাসুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ফোনালাপ প্রমাণ করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার দরপত্র বাতিল, জামানত বাজেয়াপ্ত ও তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে অবৈধভাবে ২০ লাখ টাকা কম দরদাতার নামে বালুমহাল লিজ দেয়া হয়। এতে সরকার অতিরিক্ত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।

জানতে চাইলে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল এব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোরাহওয়ার্দী হোসেন বলেন, ফোনে কে কাকে কি বলল তা নিয়ে কিছু যায় আসেনা।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top