রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


নওগাঁয় আউশ ধান কাটা মাড়াই ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা


প্রকাশিত:
২২ আগস্ট ২০২০ ২১:১৭

আপডেট:
২২ আগস্ট ২০২০ ২১:১৮

নওগাঁর মাঠে মাঠে আউশ ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁ জেলায় আউশ ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে ৮৫ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। ফলন বিঘা প্রতি গড়ে ১৫ মন। আউশ ধান কাটা মাড়াইয়ের পর সেই জমিতে সুগন্ধী আতপ ( চিনি আতপ) ধানের চাষ করা হয়। কৃষকরা বলছেনে এতে বিঘা প্রতি ফলন হবে ১০ থেকে ১২ মণ।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে নওগাঁ জেলায় আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭১ হাজার ৪১৫ হেক্টর। চাষ হয়েছে ৭১ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে। ৬টি উপজেলায় তিন দফা বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার ৬৩৯ হেক্টর জমির ধান। যে সব জমির বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে সে জমিতে আগাম জাতের আমন ধান রোপন করা হচ্ছে। বাকি জমিতে পর্যায় ক্রমে রবি শস্য আলু, সরিষা ও ভুট্রা চাষ করা হবে।

চলতি আউশ মৌসুমে নওগাঁর মান্দায় ১৯ হাজার ৭০০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ১৫ হাজার ৭৬০ হেক্টর, নিয়ামতপুরে ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর, ধামইরহাটে ৯ হাজার ৬৯০ হেক্টর, পত্নীতলা ৯ হাজার ২৪০ হেক্টর, সদরে ৪ হাজার ২৭৫ হেক্টর, সাপাহারে ১ হাজার ৮১৫ হেক্টর, আত্রাইয়ে ১ হাজার ৫৩৫ হেক্টর, রানীনগরে ১ হাজার ৪২৫ হেক্টর, বদলগাছীতে ১ হাজার ৪২০ হেক্টর, , পোরশায় ১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষ করা হয়েছে।

কৃষি বিভাগ আউশের প্রণোদনা হিসেবে জেলায় ৩১ হাজার ২৬৮ জন কৃষকদের মাঝে ৫ কেজি উন্নত জাতের বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ২০ এমওপি সার সরবরাহ করছেন।

পত্নীতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, কৃষকরা চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এ বছর এই উপজেলায় গত বছরের তুলনায় বেশী জমিতে বেশী আউশ চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন। ধানের ফলন ও দামে কৃষকরা খুশি।

নজিপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের পনেই আউশ ধান চাষ করা হয়েছে। ফলে জমি পতিত থাকে না। এই ধান ঘরে তোলার পর আমন ( সুগন্ধী আতপ) ধান চাষ করা হয়। আউশ চাষ করলে বছরে তিনটি ফসল হয় বোরো, আউশ ও আমন ধান।

মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, মহাদেবপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশী ধান চাষ হয়। আউশ ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে ধানের দাম ভালো। আউশ ধান চাষে তেমন সেচ ও সারের প্রয়োজন হয় না। কৃষকরা যতখন ফসল ঘরে না তুলছেন ততক্ষণ কৃষি বিভাগ তাদের পাশে থাকবে।

মহাদেবপুর উপজেলার চকরাজা গ্রামের কৃষক মন্টু হোসেন বলেন, প্রাকৃতিক বৃষ্টিতেই এবার আউশ ধান চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আড়াই বিঘা জমিতে আউশ ধান লাগিয়েছিলাম। ধান কাটা শুরু করেছি। তবে গত বছরের মতো ফলন তেমন ভালো হচ্ছে না। বিঘা প্রতি ফলন ৮ থেকে ১০ মন। প্রতি বিঘাই খরচ হয়েছে ৪ হাজার টাকা। বিঘাই ধান বিক্রি হবে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। সব খরচ বাদে বিঘা প্রতি লাভ এক থেকে দুই হাজার টাকা থাকবে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রবীআহ নূর আহম্মেদ বলেন, নওগাঁয় আউশ ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। তিন দফা বন্যায় ৬টি উপজেলায় আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার ৬৩৯ হেক্টর জমির। ইতোমধ্য ৮৫ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। ফলন বিঘা প্রতি গড়ে ১৫ মন হারে। বাজারে কাটা পিটা (কাঁচা) ধান বিক্র হচ্ছে ৭শত থেকে ৮শত টাকা মন। ধানের ফলন ও দামে কৃষকরা খুশি। যে সব জমির বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে সে জমিতে আগাম জাতের আমন ধান চাষ করা হচ্ছে। বাকি জমিতে রবি শস্য আলু, সরিষা ও ভুট্রা চাষ করা হবে।

ক্যাপসন: নওগাঁর মাঠে মাঠে কৃষকরা আউশ ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ত সময় পার করছে। ছবিটি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চকরাজা মাঠ থেকে তোলা হয়েছে।

 

আরপি/এমএএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top