রাজশাহী শুক্রবার, ১৪ই মার্চ ২০২৫, ৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১


যৌতুকলোভী স্বামীর নির্যাতনে ঘরছাড়া স্ত্রী


প্রকাশিত:
১২ জুলাই ২০২০ ২১:৫৮

আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ০৩:১৫

ছবি: নির্যাতিতা গৃহবধু শারমিন আক্তার

নওগাঁর ধামইরহাটে ১০ লাখ টাকা যৌতুক না দেওয়ায় গৃহবধুকে শশুর বাড়ী থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এমন অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে গৃহবধু শারমিন আক্তার। স্থানীয়ভাবে দেন-দরবারে স্বামীর সংসারে যেতে যান স্ত্রী শারমিন আক্তার কিন্তু যৌতুকলোভী স্বামী-শশুরবাড়ীর লোকদের কারণে ঘটনাটি মীমাংসা না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে মামলা দিয়েছেন ভুক্তভোগী গৃহবধু। পাষন্ড স্বামী এখন জেল হাজতে থাকায় শশুর ও ননদের হুমকি মাথায় নিয়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন গৃহবধু শারমিন আক্তার।

অভিযোগ সূত্রে ও ভুক্তভোগী গৃহবধু জানান, ২০১৯ সালে পরিবারিক ভাবে আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের শাহাজাহান আলীর মার্স্টাস পাস মেয়ে মোছা. সারমিন আক্তারের সাথে বিয়ে হয় পার্শ্ববতী রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আগ্রাদ্বিগুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিনের সাথে। বিয়ের ৩মাস পর যৌতুকলোভী স্বামী আব্দুল মমিন মোটর সাইকেল না দিতে পারলে গৃহবধু শারমিন আক্তারের শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন।

গরীব বাবা মা মেয়ের সংসারের কথা ভেবে দেড় লাখ টাকায় ১টি মোটরসাইকেল কিনে দেয়। মাস খানেক পর আবারও স্ত্রী সারমিনের নিকট ১০ লাখ টাকা দাবী করে স্বামী আব্দুল মমিন। যৌতুকের এত বড় অংকের টাকা না দিতে পারায় চলতি বছরের ২৯ মার্চ শশুর বাড়ীর লোকজন মারপিট করলে পরদিন বাবা শাহাজাহান আলী মেয়েকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে এ ঘটনাটি কোন প্রকার মিমাংসা না হওয়ায় থানায় মামলা করলে স্কুল শিক্ষক আব্দুল মমিন ও শশুর গ্রেফতার হন। স্বামী হাজতে থাকলেও শশুর জামিনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেন শশুর আব্দুস সাত্তার ও ননদ রওশন আরা।

স্ত্রী সারমিন জানান, আমার বাবা গরীর হিসেবে ৪ ভরি সোনা ও দেড় লাখ টাকা এনজিও থেকে ঋণ করে দিয়েছে আমার সুখে জন্য কিন্তু কপাল খারাপের জন্য এমন স্বামী পেয়েছি। কথায় কথায় আমার স্বামী বলে অন্যত্র বিয়ে করলে নাকি ২৫ লাখ টাকা পাবে। আর সে কারনেই আমাকে তাড়াতে দিনের পর দিন এই নির্যাতন।

এ বিষয়ে আগ্রাদ্বিগুন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেনজির আহমেদ জানান, যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা হওয়ায় সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিনকে ম্যানেজিং কমিটি সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

তবে অভিযুক্ত শশু আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমাকে যখন জেল খাটতে হয়েছে, এখন সেই বেটা বউকে নিয়ে সংসার করা যাবে কি না ভাবতে হবে। আর আমরা কোন টাকা পয়সা চাইনি বা হুমকিও কাউকে দেইনি।

এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার ওসি মো. আবদুল মমিন জানান, ঘটনার বিষয়ে ধামইরহাট থানায় চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল একটি মামলা হয়েছিল সেই প্রেক্ষিতে ১ নং আসামী এখনও হাজতে আছে। বাদীকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে নতুন ভাবে অভিযোগ করে একটি জি.ডি দায়ের করেছে বাদী সারমিন আক্তার। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখে অইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করাহবে।

 

আরপি/আআ-০৪



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top