নওগাঁয় পুলিশি নির্যাতনে আসামির মৃত্যুর অভিযোগ
নওগাঁয় নরেশ চন্দ্র দাস (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ। তিনি নওগাঁ সদর থানায় কর্মরত।
নিহত নরেশ চন্দ্র দাস নওগাঁ শহরের মুন্সিপাড়ার নিমাই চন্দ্র দাসের ছেলে। রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের থানার মোড় সংলগ্ন ডা. শাহিদার চেম্বারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের ছেলে পরেশ অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে বাবাকে এএসআই মাসুদ তিনবার ফোন করে যেতে বলা হয়। বাবা বাহিরে যাননি। পরে সন্ধ্যার দিকে এএসআই মাসুদ সহ দু’তিন জন ব্যক্তি বাড়িতে এসে বাবাকে ডেকে নিয়ে যান। সন্ধ্যার দিকে থানার মোড় সংলগ্ন ডা. শাহিদার চেম্বারের পাশে বাবা চিৎকার করছিল। এসময় স্থানীয় এক ব্যক্তি টর্চলাইট জ্বালালে এএসআই মাসুদ সহ কয়েকজনকে থানার দিকে দৌড়ে যেতে দেখেন। পরে স্থানীয়রা এসে দেখেন বাবা অচেতন অবস্থায় সেখানে পড়ে আছে। এরপর তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাবা আগে থেকেই হার্ডের রোগী ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী রিতা রানী বলেন, মানুষ যতই অপরাধ করুক না কেন তাকে তো পিটিয়ে মেরে ফেলার কোন অধিকার কারো নাই। স্বামীকে পিটিয়ে মেরে ফেলায় ওই অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
অভিযুক্ত এএসআই মাসুদ বলেন, আমি যে নরেশ চন্দ্র দাসকে ফোন করেছি, ফোন ট্যাগ করলেই তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। তবে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসা বা পিটিয়ে মেরে ফেলার সাথে সম্পৃক্ত নাই বলে দাবী করেন তিনি।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, নরেশ চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে থানায় পূর্বে মাদকের ছয়টি মামলা ছিল। তিনি আবারও মাদক বিক্রি করছেন এমন সংবাদে এএসআই মাসুদ তাকে ডাকে। ডাকার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে ঘটনাস্থলে রেখেই চলে আসে। ইতোপূর্বেও নরেশ অসুস্থ (হার্ডের) হয়ে পড়েছিলেন। তবে আমার পুলিশ অপরাধ করে থাকে তাহলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রকৃত বিষয় জানা যাবে।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মুনির আলী আকন্দ বলেন, পুলিশি নির্যাতনের বিষয় ছিল কিনা তা জানিনা। তবে বাহিরে মারা যাওয়া এক রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। সোমবার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নরেশ চন্দ্র দাস এক সময় মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে মুদি দোকান করে সংসার চলে।
আরপি/এমএইচ
বিষয়: নওগাঁ

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: