রাজশাহী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


পত্নীতলায় লাম্পি স্কিন রোগে প্রায় দুইশো গরুর মৃত্যু


প্রকাশিত:
২১ জুলাই ২০২৩ ০০:৪১

আপডেট:
৪ মে ২০২৪ ২০:১০

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বা চর্মরোগে রোগের প্রাদুর্ভাব। গ্রাম থেকে গ্রামে দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়ায় এবং আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেড়ে চলায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

সরজমিনে জানা যায়, মশা-মাছির মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী লাম্পি স্কিন রোগ। এই রোগে আক্রান্ত গরু-বাছুর প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় ও একপর্যায়ে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। জ্বরের সঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়। একপর্যায়ে আক্রান্ত গরুর শরীরের বিভিন্ন জায়গার চামড়া পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্ট হয়। ধারাবাহিকভাবে এই ক্ষত শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। গরু ঝিম মেরে থাকে ও কাঁপতে শুরু করে।

কিডনির ওপর প্রভাব পড়ার ফলে গরু মারাও যায়। আর সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় মারা যাচ্ছে গরু। মারাত্মক এ রোগ প্রতিরোধে পশু চিকিৎসকরা গাঁট পক্স ভ্যাকসিন দিচ্ছেন। কিন্তু তাতেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। সঠিক ভ্যাকসিন না থাকায় খামারিরা বিপাকে পড়ছেন বলেও জানান তারা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের হিসেবে, পত্নীতলা উপজেলায় প্রায় ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৫০০টি গবাদি পশু রয়েছে। এর মধ্যে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়েছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ গরু যার সংখ্যা ৫ হাজারেরও ওপরে। এর মধ্যে আক্রান্ত গরুর ৫ শতাংশ মারা গেছে যার পরিমাণ প্রায় ২০০।

শিহাড়া ইউনিয়নের হাফিজা বানু বলেন, আমার ২টা গরুর মধ্যে একটা গরু লাম্পি ভাইরাসে মারা গেছে আরেকটার শরীর থেকে মাংস খুলে খুলে যাচ্ছে। আমার গ্রামের আরো ৩ জনের গরু এই ভাইরাসে মারা গেছে।

নজিপুর ইউনিয়নের নছির উদ্দিন বলেন, আমার একটি বাছুর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

ঘোষনগর ইউনিয়নের ইসতিয়াক রহমান বলেন, আমার চারটি গরুর মধ্যে একটি এই রোগে মারা গেছে। বাকি তিনটি গরুর অবস্থাও খুব খারাপ।

পত্নীতলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, খামারিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সারা দেশের মতো পত্নীতলা উপজেলাতেও লাম্পি স্কিন রোগের আবির্ভাব ঘটেছে।মশা-মাছির কামড়ে এই রোগ এক পশু থেকে অন্য পশুর শরীরে ছড়ায়। লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত পশুর মৃত্যুঝুঁকি শতকরা ৫ শতাংশ হলেও অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও বাছুর গরুর মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে।

চিকিৎসকরা বলছেন এই রোগের এখন পর্যন্ত তেমন কোনো চিকিৎসা বা প্রতিষেধক নেই। আক্রান্ত পশুকে ঘন ঘন স্যালাইন পানি, বেশি বেশি কাঁচা ঘাস খাওয়াতে হবে। শরীরে জ্বর বেড়ে গেলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে।

 

 

আরপি/এসআর-০৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top