রাজশাহী মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১


রাণীনগরে রহস্য উদঘাটন

টাকা চুরির সন্দেহে শ্বাসরোধে হত্যার


প্রকাশিত:
২৫ জুলাই ২০২২ ২১:২৬

আপডেট:
২৬ জুলাই ২০২২ ০৬:৫০

ছবি: প্রতিনিধি

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পূর্ব বালুভরা গ্রামের জমসেদ আলীর ছেলে হযরত আলী (২৩) এর হত্যাকন্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। টাকা চুরির সন্দেহে হযরতকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বস্তায় ভরে মাটিতে পুঁতে ফেলে বন্ধু নাহিদ। নাহিদ একই গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। শুক্রবার দুপুরে রাণীনগর থানাপুলিশের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানায় পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে নওগাঁ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) গাজিউর রহমান বলেন, হত্যার শিকার হযরত আলী বেশ কিছু দিন ধরে আসামী নাহিদের বাড়ীতেই নাহিদের সাথে থাকতো এবং রাত যাপন করতো।

ঘটনার কয়েক দিন আগে নাহিদের ড্রয়ারে রাখা ১০/১৫ হাজার টাকা চুরি হয়ে যায়। টাকাগুলো হযরত নিয়েছে এমনটি সন্দেহ করে টাকা ফেরত দিতে হযরতকে চাপ দেয় নাহিদ।

এসময় ড্রয়ার থেকে টাকা নেয়নি বলে অস্বীকার করে হযরত আলী। এর পর গত শনিবার সকাল অনুমান ৯টা নাগাদ নাহিদের ঘরের মধ্যে আবারো হযরতকে টাকা ফেরত দিতে বলে নাহিদ। তখনও হযরত টাকা নেয়নি জানিয়ে দিলে উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।

এক পর্যায়ে হযরত আলী নাহিদের ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচঁড়ানোর সময় পিছন থেকে নাহিদের কাছে থাকা গামছা দিয়ে হযরতকে গলায় পেচিয়ে ধরে খাটের উপর ফেলে পিঠের উপর হাঁটু দিয়ে শক্ত ভাবে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এর পর হযরতের প্যান্টের পকেট থেকে চার হাজার টাকা বের করে নিয়ে ওই দিন বিকেলে নাহিদের বাড়ীর একটি নির্মানাধীন ঘরের মাটির কাঁচা মেঝের ভিতর গর্ত খুরে বস্তায় ভরে পুঁতে ফেলে।

থানাপুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী নাহিদ এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তিনি আরো বলেন,নাহিদকে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তী মূলক জবানবন্দী প্রদানের নিমিত্তে হাজির করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, হত্যার শিকার হযরত আলী পেশায় একজন ভ্যান চালক ছিলেন। শুক্রবার রাতে স্থানীয় একটি গ্যারেজে ভ্যান রাখার পর থেকে নিখোঁজ হয় হযরত আলী। এর পর থেকে হযরতের ফোন বন্ধ পায় পরিবারের লোকজন। তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে থানা পুলিশকে মৌখিক ভাবে বিস্তারিত জানায় হযরতের স্বজনরা।

এর পর রাণীনগর থানার ওসি মো: শাহিন আকন্দ নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্না মিয়াকে জানালে তার সার্বিক দিক নির্দেশনায় তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে নাহিদকে আটক করে।

আটক নাহিদের দেয়া তথ্য মতে নাহিদের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় বৃহস্পতিবার হযরতের বাবা জমসেদ আলী বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে রাণীনগর থানার ওসি মো: শাহিন আকন্দ, নওগাঁ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) ইন্সপেক্টর নন্দীতা সরকার,মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

আরপি/এমএএইচ-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top