রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১


‘স্ত্রীকে হত্যার পর পালালো স্বামী’

শিশুর কাঁন্নার আওয়াজে তালাবদ্ধ ঘর থেকে মায়ের মরদেহ উদ্ধার


প্রকাশিত:
২৩ জুলাই ২০২২ ০২:১০

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৫৮

ছবি: মহাদেবপুর থানা

২১ জুলাই বৃহস্পতিবার। ঘড়ির কাটা তখন দুপুর ৩টা ছুঁইছুঁই। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের কাচারীপাড়া এলাকায় এক শিশুর কাঁন্নার আওয়াজ ভেসে আসছিল। সেই কাঁন্নার উৎস খুঁজতে আশপাশ থেকে লোকজন আত্রাই নদীর বাঁধ সংলগ্ন রবিউল আলম লিটনের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান তালাবদ্ধ শয়ন ঘরে অনবরত কেঁদে যাচ্ছে এক কন্যাশিশু।

ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের তালা ভেঙে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় মায়ের নিথর দেহের পাশে বিছানায় কাঁন্না করছিল তিন বছর বয়সী অবুঝ শিশুটি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হৃদয়বিদারক এমন দৃশ্যে হতভম্ব এলাকাবাসী।

নিহত ওই গৃহবধূর নাম শিউলি আক্তার। বয়স ৩০ বছর। তিনি পার্শ্ববর্তী পত্নীতলা উপজেলার খিরশিন গ্রামের হযরত আলীর মেয়ে।ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী আল-আমিন হোসেন পলাতক রয়েছে। আল-আমিন জেলার সাপাহার উপজেলা সদরের জিরোপয়েন্ট এলাকার বকুল হোসেনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে শিউলিকে নাক-মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ঘরে তালা দিয়ে পালিয়েছে তার স্বামী। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নিহত শিউলির বাবা বাদি হয়ে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে আল-আমিনের বিরুদ্ধে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ।

তিনি জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকান্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত গৃহবধূর পরিবারের বরাতে ওসি জানান, আল-আমিনের সাথে এক সন্তানের জননী শিউলির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এরপর ২০২০ সালে পরিবারের মতামত উপেক্ষা করে আগের স্বামী-সংসার ফেলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শিউলি। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রী কন্যাসন্তানসহ মহাদেবপুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। আল-আমিন স্থানীয় বাজারে দর্জির কাজ করত। গত এক সপ্তাহ ধরে শহরের কাচারীপাড়া এলাকার জৈনক লিটনের বাড়িতে ভাড়া উঠেন তারা।

আল-আমিন যৌতুকের দাবিতে তার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় মারপিট করত। এছাড়া পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের সংসারে অশান্তি চলছিল বলেও জানান তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই বেলাল হোসেন জানান, অভিযুক্ত আল-আমিন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

 

আরপি/ এমএএইচ-১১



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top