রাজশাহী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


নওগাঁয় ওসির নির্যাতনে কৃষককের মৃত্যুর অভিযোগ


প্রকাশিত:
২৯ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪৭

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪৯

ছবি: পত্নীতলা থানার ওসি শামছুল আলম
নওগাঁর পত্নীতলায় পারিবারিক সমস্যা সমাধানের নামে থানায় নিয়ে এসে শালিস-বৈঠকে কৃষক হামিদুর রহমানকে (৪৫) নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওসি শামছুল আলমের বিরুদ্ধে।
 
বুধবার ভোর রাতে হামিদুর রহমানকে রামেকে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় বুধবার দুপূরে মৃতের স্বজনরা ওসি শামছুল আলমের বিচার দাবীতে মরদেহ নিয়ে পত্নীতলা থানা চত্বরে অবস্থান করে। পরে পুলিশ ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যে দ্রুত ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ নওগাঁ মর্গে প্রেরণ করেছে।
 
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বোরাম গ্রামের হামিদুর রহমান এর সাথে তাঁর স্ত্রী ফাহিমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব দেখা দিলে হামিদুর কয়েকদিন আগে তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেন। এ ঘটনায় প্রায় ১০দিন আগে হামিদুরের স্ত্রী ফাহিমা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করেন।
 
অভিযোগের প্রেক্ষিতে পত্নীতলা থানা পুলিশ ২৫ এপ্রিল হামিদুরকে বাড়ি হতে তুলে নিয়ে আসে। থানায় শালিসী বৈঠকে হামিদুর তাঁর স্ত্রীকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামসুল আলম শাহ ক্ষিপ্ত হয়ে হামিদুরকে উপর্যুপুরি কিল-ঘুষি এবং লাথি মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে হামিদুরের মাথা ইটের ওয়ালের সাথে সজোরে ধাক্কা দিয়ে আহত করেন।
 
এমতাবস্তায় হামিদুরের সাথে থাকা খালাতো ভাই ফারুক হোসেন ও প্রতিবেশী নইমুদ্দিন আহত অবস্থায় তাকে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। ২৭ এপ্রিল মঙ্গলবার হামিদুরের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে প্রথমে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ডাক্তারের পরামর্শে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে স্বজনরা বুধবার দুপূরে এ্যামুলেন্স যোগে মরদেহ পত্নীতলা থানায় নিয়ে আসেন ওসির বিচারের দাবিতে।
 
নিহতের মা আছিয়া বেগম বলেন, আমার ছেলেকে ওসি বুকে লাথি-কিল, ঘুষি ও দেওয়ালের তার মাথা জোরে আঘাত দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।
 
খালাতো ভাই ফারুক হোসেন বলেন, ওসির মারধরে দু’বার হামিদুরের মাথা ইটের দেওয়ালের সাথে ধাক্কা লাগায় সে চরমভাবে আহত হয়। এক পর্যায়ে পিটুনির ভয়ে সে বউকে নেওয়ার জন্য রাজী হলেও ওসি সাহেব ছাড় দেয়নি। মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে সুষ্ঠু বিচারের জন্য। কিন্তু থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।
 
নওগাঁর পত্নীতলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামসুল আলম শাহ ও নওগাঁ পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দল মান্নান মিয়ার সাথে মুঠোফোনে একাধিকরা যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
 
উল্লেখ্য, ওসি শামছুল আলম পত্নীতলা থানায় যোগদানের পর থেকে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে ইত্যেমধ্যে একটি ক্লিনিকের নার্স হত্যা, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন মামলা না নেওয়াসহ নানান বিকর্তের সৃষ্টি করেছেন বলে পত্নীতলা ও ধামইরহাটবাসিদের অভিযোগ রয়েছে।
 
আরপি/ এসআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top