রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, আহত থানা বিএনপির সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৮


প্রকাশিত:
৩১ মার্চ ২০২১ ০২:১০

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ২২:২০

ছবি: আহত  থানা বিএনপির সভাপতি রবিউল আলম বুলেটকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে

নওগাঁয় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে আহত মহাদেবপুর থানা বিএনপির সভাপতি রবিউল আলম বুলেটসহ আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা ২টায় উপজেলার নওহাটা মোড় এলাকা থেকে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ নওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির সহযোগিতায় তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিন মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, বিএনপি নেতা ফেরদৌস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হান্নান, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আব্দুস সোবহান, সদস্য চঞ্চল, ইখতিয়ার উদ্দীন দূরন্ত ও বিএনপি সভাপতির গাড়ি চালক। তাদের গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চত করেছে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হেফাজত কর্মী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন দুপুর ১২ টায় নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করে নেতা-কর্মীরা। এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।

একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনার ২-৩ মিনিট পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের পূর্ব দিক থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অন্তত ২০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ চলে। এতে ব্রিজের মোড়, কলেজ মোড় সড়ক ও কেডির মোড়-ব্রিজের সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে নওগাঁ সদর থানা ও পুলিশ লাইনস্ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাস্তা ছেড়ে দেয়। এ সংঘর্ষে বিএনপি নেতা রবিউল আলম বুলেটসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়।

নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করি। কিন্তু পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই বিএনপির নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করতে শুরু করে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা কেডির মোড় এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে সেখানে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশের গুলিতে আহত বিএনপির কর্মী মিলি আখতার ও ছাত্রনেতা আজিজুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যদের নওগাঁ সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।’

মহাদেবপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য কাজী সামসুজ্জোহা মিলন বলেন, ‘নওগাঁয় জেলা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের হামলায় আহত উপজেলা বিএনপির সভাপতি রবিউল আলম বুলেট প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে মহাদেবপুর ফিরছিলেন। পথিমধ্যে নওহাটা মোড় এলাকায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।’

নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনুমতি ছাড়াই বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করে। ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিএনপির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় ৬-৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

আরপি/ এসআই-৮



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top