রাজশাহী মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০শে মাঘ ১৪৩১


ভিক্ষুক পরিবারের মামলা নিতে দেরি করা ওসিকে বদলি


প্রকাশিত:
৮ মার্চ ২০২১ ০২:১২

আপডেট:
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৪

ছবি: প্রতিনিধি

নওগাঁর মহাদেবপুরে রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য সন্ত্রাসী কায়দায় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় প্রকাশ্য দিবালোকে অস্ত্র উঁচিয়ে ভিক্ষুকের বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার সময় ৯৯৯ এ ফোন করার পর তাদের নির্দেশে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও সে ব্যাপারে মামলা নিতে তিন দিন দেরি করা সেই ওসিকে বদলি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারী তদানিন্তন মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েলকে নওগাঁ সদর মডেল থানায় বদলির আদেশ দেন।

অভিযোগ করা হয়েছে যে, উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের রামরায়পুর গ্রামের ভিক্ষুক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা উমর আলীর প্রতিবেসী বেলাল, তার ভাই ও চাচাসহ কয়েকটি পরিবারের যাতায়াতের জন্য ভিক্ষুক উমর আলীর মেয়ে রুমিয়া বেগমের কেনা আড়াই কাঠা জমির মধ্যে এক কাঠা জমি জবর দখল করে গাছপালা কেটে ফেলে গত ২০১৯ সালের ২২ মে রাস্তা বের করা হয়।

গত বছর ২৫ এপ্রিল সেখানে ইট দিয়ে ৫ ফুট রাস্তা সোলিং করা হয়। রুমিয়া বেগম যখন পাকা বাড়ি করবেন তখন একফুট ইট তুলে ফেলতে পারবেন বলে জানানো হয়। ভিক্ষুকের লোকজন এতে বাধা দিলে সন্ত্রাসীদের স্বসস্ত্র হামলায় ভিক্ষুকের স্ত্রী সামছুন্নাহার, মেয়ে রুমিয়া, ছেলে সামসুদ্দিন ও ছেলের বউ রুমিয়া খাতুন মারাত্মক আহত হয়। সামসুদ্দিনের পা ভেঙ্গে যায় ও মাথায় ৬ টি সেলাই দিতে হয়।

গত ২৫ জানুয়ারী রুমিয়া বেগম বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ওই রাস্তার ১ ফুট ইট তুলে সেখানে ওয়াল দিয়ে দুইট ঘর নির্মান করেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারী বিকেল সাড়ে ৪ টায় প্রতিপক্ষরা সেই বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। এসময় স্থানীয় একজন সাংবাদিক ৯৯৯ এ ফোন দিলে তাকে লাইনে রেখেই মহাদেবপুর থানা পুলিশকে সেখানে যাবার নির্দেশ দেয়। ৯৯৯ কর্র্র্তৃপক্ষের নির্দেশে মহাদেবপুর থানার এসআই নূর ইসলাম সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

তিনি বিষয়টি তদন্ত করে আসলেও থানায় এব্যাপারে কোন মামলা দায়ের করেননি। পরদিন ভিক্ষুকের মেয়ে রুমিয়া বেগম থানায় এসে মামলা দায়ের করতে চাইলে থানা পুলিশ তাকে বিভিন্নভাবে নিরুৎসাহীত করতে থাকে। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় রুমিয়া একটি লিখিত এজাহার তদানিন্তন মহাদেবপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েলের কাছে দাখিল করেন। কিš‘ তিনি পরবর্তী তিন দিনেও মামলাটি এন্ট্রি করেননি। এব্যাপারে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে অবশেষে মামলাটি এন্ট্রি করা হয়।

সংবাদ প্রকাশের পর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ কয়েকটি সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মামলা গ্রহণে বিলম্বের বিষয়টি জানায়। অবশেষে এই ঘটনার তিন সপ্তাহেরও কম সময়ে তাকে বদলি করা হয়। জানতে চাইলে ওই ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, বদলির সাথে ওই ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই। ১৮ মাস পূর্ণ হওয়ায় তাকে বদলি করা হয়েছে বলেও জানান।

আরপি/ এসআই-৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top