সেই রুহুলকে গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ
 
                                নওগাঁর মহাদেবপুরে অপহরণ করে টর্চার সেলে তিনদিন আটকে রেখে মিঠুন-শ্যামলী দম্পতিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ও চুল কর্তনের ঘটনার আটদিন পর থানায় মামলা হলেও মূল আসামী টর্চার রুহুলকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আলোচিত এ মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মূলহোতা গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশি তৎপরতা নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে। রুহুল আমিন উপজেলার বোয়ালমারী এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ আগস্ট পত্নীতলা থেকে নার্সারি ব্যবসায়ী মিঠুনকে জোড়পূর্বক কার গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে বোয়ালমারী মোড়ে রুহুলের বয়লারে অবস্থিত টর্চার সেলে আটকে রাখে। মোবাইলে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে রুহুল। শ্যামলী বিকাশে ১০ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু রুহুল ও তার লোকজন আরও টাকা চায়। টাকা না পেয়ে মিঠুনের পায়ের রগ কেটে দেয়, প্লায়ার দিয়ে চিমটিয়ে হাতের আঙ্গুল জখম করে, হাতুড়ি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। তৃতীয় দিন ১৭ আগস্ট শ্যামলী এসআই সাইফুল ইসলামকে বিষয়টি জানিয়ে রুহুলের বয়লারে যান। রুহুল ও তার দুই স্ত্রী শ্যামলীকে বেদম প্রহার করে তার মাথার চুল কেটে দেয়। পরে এসআই সাইফুল সেখানে উপস্থিত হয়ে মারাত্মক আহতবস্থায় শ্যামলী ও তার স্বামীকে উদ্ধার করে। কিন্তু তিনি কোনই আইনানুগ ব্যবস্থা নেননি।
গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়। এরপরই ২২ আগস্ট দিবাগত রাতে পুলিশ শ্যামলী রাণীকে ডেকে এনে মামলা এন্ট্রি করে রুহুলের বাসায় অভিযান চালায়। তার দুই স্ত্রী রুবাইয়া আকতার বৃষ্টি ও মুক্তা পারভীনকে আটক করলেও রুহুল পালিয়ে যায়। অপহরণে ব্যবহৃত কারটি জব্দ করে ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষর নেয়া ফাঁকা ষ্ট্যাম্প উদ্ধার করে পুলিশ। রুহুল উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হলেও প্রভাবশালীদের সাথে ছিল তার দহরম মহরম। ক্ষমতাসীন দলের পোর্টফোলিও একজন নেতার ছেলের সাথে রুহুলের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীনুল ইসলাম বলেন, মূলহোতা রুহুল ও তার সহযোগী মামলার অন্য আসামী পত্নীতলা উপজেলার ছোট চাঁদপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, আসামীদের আটকের বিষয়ে পুলিশ ব্যাপক তৎপর রয়েছে।
আরপি/এসআর-১৯
বিষয়: মহাদেবপুর টর্চার সেল গ্রেফতার

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: