রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে গমের ফলন বাড়বে বিঘা প্রতি ৩ মণ


প্রকাশিত:
২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:০৭

আপডেট:
২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:০৮

ছবি : ইন্টারনেট

বছর চারেক পূর্বে নানামুখী সঙ্কটের ফলে রাজশাহীতে কমে যায় গমের আবাদ। বর্তমানে উন্নত নতুন জাত, ভালো সেচের ব্যবস্থা ও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আশানুরূপভাবে বাড়ছে গম চাষ। বিগত দিনে গমের জমি কমলেও এবার বেড়েছে। চলতি মৌসুমে ১ হাজার হেক্টর বেড়ে রাজশাহীতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ১০০ হেক্টরে।

গমের নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাত, সেচ ও কীটনাশকের খরচ কম এবং অনুকূল আবহাওয়ায় ফলনবৃদ্ধির ব্যাপারে আশাবাদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবছর বিঘা প্রতি ২ থেকে ৩ মণ হারে বাড়বে গমের ফলন। অতীতে বিঘা প্রতি দেশি জাতের গমের ফলন হয়েছে ৮ থেকে ১০ মণ। নতুন উচ্চ ফলনশীল এই জাতের কারনে ফলন দাঁড়াবে ১১ থেকে ১৩ মণে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, চলতি ২০২০-২১ মৌসুমে জেলায় ২৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় গমের চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে। গত বছর জেলায় ২৫ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। ওই বছর ফলন ছিলো হেক্টর প্রতি ৩ দশমিক ৭৩ মেট্রিক টন।

জানা গেছে, রাজশাহীর পবা, মোহনপুর, বাঘা, চারঘাট ও তানোর উপজেলায় গমের চাষ বেশি হয়। বাকি উপজেলায় তুলনামূলক কম হয় গমের আবাদ।

সংস্থাটি আরও জানায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ৬ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বাঘায় ৫ হাজার ৫২৫ হেক্টর, চারঘাটে ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর, পবায় ২ হাজার ১৯৫ হেক্টর, তানোরে ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর, পুঠিয়ায় ২ হাজার ৫১৫ হেক্টর, বাগমারায় ১ হাজার ৫৬০ হেক্টর, দূর্গাপুরে ১ হাজার ১০ হেক্টর ও মোহনপুর উপজেলায় ৮৫ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এছাড়াও নগরীর মতিহারে ৩০ এবং বোয়ালিয়া থানায় ৫০ হেক্টর জমিত গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

বাঘা উপজেলার কলিগ্রাম এলাকার চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৯ বিঘা জমিতে গমের চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে গমের বীজ পেয়েছি। তবে গমের গমের বীজ পেলেও সারের সংকট দেখা দিয়েছে। আবার সার পেলেও লাগামহীন দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সারের এই লাগামছাড়া দামের পেছনে সিন্ডিকেট চক্রের হাত রয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

একই এলাকার চাষি আ. হালিম জানান, গত চার বছর আগে বাড়িতে খাওয়ার জন্য এক থেকে দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করতেন। গত দুই বছর থেকে ৪ থেকে ৫ বিঘা জমিতে গম চাষ করছেন। এখন গমের বাজার দর যেমন ভালো, তেমনি গম চাষে বাড়তি ঝামেলাও নেই। তিনি বলেন, অল্প খরচেই গম চাষ করা যায়। বিঘা প্রতি ১৬ মণ হারে গমের ফলন হয়। এ বছর ভালো ফলন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

একইরকম মন্তব্য করেন গোদাগাড়ী কাঁকনহাট এলাকার চাষি মোমিনুল ইসলাম, মোহনপুরের ময়েজ উদ্দিন, বাগমারার আবুল কালাম, তানোরের গোলাম মোস্তফা ও পবা উপজেলার সাজ্জাদ হোসেন।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ২৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি। জেলায় বারি-২৫, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৩ জাতের গম বেশি চাষ হয়।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহীতে দেশি জাতের গম বিঘা প্রতি ৮-১০ মণ হারে হয়। কিন্তু নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল গম বিঘা প্রতি ১১-১৩ মণ পর্যন্ত হবে। গত বছর বৈরি আবহাওয়ার কারণে ১০-১১ মণ হলেও এবার উৎপাদন বাড়বে। বিশেষ করে এ গমে দুই থেকে তিনবার সেচ দিতে হয়। সার কীটনাশকেরও তেমন খরচ নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা। 

আরপি/ এএন-০৪



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top