রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে আমের ক্ষতি ১০০ কোটি টাকা


প্রকাশিত:
২২ মে ২০২০ ০২:৫৫

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:০১

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার রাতের ঝড়ে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ আমের ক্ষতি হয়েছে যার আনুমানিক বাজারদর ১০০ কোটি টাকা।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ মে ২০২০) সকালে গণমাধ্যমে এমন তথ্য জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাঘা, চারঘাট, পবা, বাগমারা, গোদাগাড়ী, মোহনপুর ও তানোরেও ঝড়ের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাঘা-চারঘাট, পুঠিয়া ও দৃর্গাপুরের আমচাষিদের। এই চারটি উপজেলাতেই আমচাষ সাধারণত বেশি হয়।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, প্রায় ২০ শতাংশ আম ঝরেছে। এ ঝড়ে ক্ষতির মুখে পড়লেন আম চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল হক বলেন, রাতেই বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে আমরাই জেলা প্রশাসককে জানিয়েছিলাম যে ২০ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। তবে সকালে আমরা বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করে দেখছি ক্ষতির পরিমাণ আরেকটু কম। শহরে ১০ শতাংশ এবং চারঘাট উপজেলায় এসে ১৫ শতাংশ আম ঝরে পড়ার দৃশ্য দেখছি। এই ঝড়ে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিকটন আম পরিপক্ক হওয়ার আগেই ঝরে গেলো।

গাছের আম ঝরে পড়ায় চাষিদের মাথায় হাত। আমেই স্বপ্ন দেখেছিলেন তারা। কিন্তু আশায় কিছুটা ভাটা ফেলেছে আম্ফানের প্রভাবে এই ঝড়। করোনায় লকডাউন পরিস্থিতিতে দাম পাওয়া নিয়েই ছিলেন অনিশ্চয়তায়। ঝড়ে লোকসানের মুখে পড়েছেন বলে জানান চাষিরা।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে চারঘাট উপজেলার আম চাষি মবিনুল ইসলাম বলেন, ঝড়ের কারণে আমার অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেলো। বাগানের অবস্থা খারাপ। দু- একটা ডাল ভেঙ্গে পড়েছে। আর কয়টা দিন গেলেই এসব আম পরিপক্ক হয়ে যেত। লাভের কথা সঠিক বলা যাচ্ছে না। আমের পরিমান তো কমে গেলো।

অন্যান্য ফসলের ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শামসুল হক বলেন, আম ঝরে গেলে তো ফলন কমবেই। এখন চাষিরা যদি আমের ভালো দাম না পান তাহলে হয়তো এবার তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই আমের যেন সঠিক মূল্য পাওয়া যায় তার জন্য যা যা করা দরকার আমাদের করতে হবে। ঝড়ে রাজশাহীর অন্য কোনো ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। মাঠে পাকা ধান আছে। সেগুলো মাটিতে শুয়ে গেছে। তবে ধান পেকে যাওয়ায় চাষিরা তা এখন কেটে নেবেন। তাই ধানের ক্ষতি হবে না। তবে কিছু ধান ঝরে যেতে পারে। মাঠের সবজির কোনো ক্ষতি হবে না।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা অনুযায়ী বুধবার ২০ মে সন্ধ্যারাত থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে আম্ফানের প্রভাব পড়তে শুরু হয়। আম্ফানের প্রভাবে ঝড়ের সৃষ্টি হয় এবং আম, লিচুসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি সাধন করে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, রাজশাহীতে ঘূর্ণিঝড়ের একধাপ নিচের মাত্রার ঝড় হয়েছে। আম্ফানের মূল কেন্দ্র রাজশাহীতে আঘাত করেনি। তবে বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৫৫ মিনিট থেকে ২টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ৫৯ কিলোমিটার। এটি অবশ্য ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রায় পড়ে না। বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটারের ওপরে থাকলে তাকে ঘূর্ণিঝড় বলে। সেইসঙ্গে বৃষ্টিপাতও হয়েছে। বুধবার ভোর ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮১ মিলিমিটার।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top