রাজশাহী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১

সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়নে রাজশাহীর গোরস্থান-ঈদগাহের নতুন রূপ


প্রকাশিত:
১৫ জুন ২০২৩ ০৭:০৯

আপডেট:
৪ মে ২০২৪ ০৭:১১

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়নে রাজশাহীর গোরস্থান-ঈদগাহের নতুন রূপ ছবি : ঢাকা মেইল
সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বদলে গেছে রাজশাহী নগরীর গোরস্থান ও ঈদগাহগুলো। দৃষ্টিনন্দন ফটক, সীমানা প্রাচীর, ওয়াকওয়ে, ওজুখানা ও জানাযা সেডে নতুন রূপ পেয়েছে নগরীর ৪৩টি গোরস্থান ও ২৮টি ঈদগাহ ময়দান।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সদ্য সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়াদকালে নগরীর এসব কবরস্থান ও ঈদগাহগুলোতে ঘটেছে আমূল পরিবর্তন।

রাজশাহী নগরীর গোরস্থান সমূহের মাটি ভরাট, দৃষ্টিনন্দন ফটক, সীমানা প্রাচীর, জানাযা সেড, ওজুখানা ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আর ঈদগাহে মাটি ভরাট, দৃষ্টিনন্দন ফটক, মেহরাব ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। এতেই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে অতি গুরুত্বপূর্ণ এসব স্থাপনায়।

রাসিকের প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, নগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪৩টি গোরস্থানে ৭ কোটি ৫৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাট, ১২ কোটি ৩৪ হাজার ৬১ হাজার টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ৯ কোটি ৩০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ২ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জানাযা সেড ও ওজুখানা নির্মাণ করা হয়েছে।

একই প্রকল্পের আওতায় ২৮টি ঈদগাহের ২ কোটি ১৬ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাট ও ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের মাটি ভরাট কাজ শেষ হয়েছে। এখন প্রধান ফটক, মেহেরাব, সীমানা প্রাচীরসহ আনুসঙ্গিক কাজ চলমান রয়েছে। আর নগরীর টিকাপাড়া, গৌরহাঙ্গা, হেতম খাঁ ও বাদুরতলা মোট ৪টি গোরস্থানের মাটি ভরাটের কাজ চলছে। কাজের অগ্রগতিও প্রায় ৯৩ শতাংশ।

এদিকে নগরীর বিসিক শিল্প নগরী, হড়গ্রাম, সপুরা হাজি মনিরুদ্দিন, সপুরা-১, সপুরা-২, দড়িখরবোনা গোরস্থান সহ মোট ৬টি গোরস্থান ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। নগরীর ১৮, ২০, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০ নং ওয়ার্ডে মোট ১৬টি গোরস্থানের মধ্যে ২৮ ও ২৯ নং ওয়ার্ডে মোট ৪টির সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। চকপাড়া, খোজাপুর, ডাশমাড়ী, কয়েরদাড়া পুরাতন মসজিদ সংলগ্ন, কয়েরদাড়া চমৎকার মন্ডল, কয়েরদাড়া খ্রিষ্ঠানপাড়া, মাতবর সালেহিন, মেহেরচন্ডী উত্তর ও দক্ষিনপাড়াসহ মোট ৯টি গোরস্থান মাটি ভরাটের কাজ শেষ পর্যায়ে।

আর ১৮, ২০, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০ নং ওয়ার্ডে মোট ১৬টি গোরস্থানের মধ্যে ২৬ নং ওয়ার্ডে মোট ৩টি সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ করা হয়েছে। ১৮, ২০, ২৭ নং ওয়ার্ডে ৩টি সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ শেষ পর্যায়ে। ১, ৪, ২৩, ২৪ ও ২৭ নং ওয়ার্ডে মোট ৬টি ঈদগাহ এর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ চলছে। কাজের অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। ১৩, ১৫ ও ১৬ নং ওয়ার্ডে মোট ৮টি ঈদগাহ এর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ চলছে। কাজের অগ্রগতি ৪০ শতাংশ।

এছাড়াও নগরীর ২৬, ২৯ ও ৩০ নং ওয়ার্ডে মোট ৮টি ঈদগাহ এর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ১৬ নং ওয়ার্ডের ৬টি গোরস্থানের অভ্যন্তরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজের অগ্রগতিও ৪০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। নগরীর ৫, ১১, ১৩, ১৪ এবং ১৫ নং ওয়ার্ডের মোট ৬টি গোরস্থানের অভ্যন্তরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজের অগ্রগতি কাজের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ। ১৭ নং ওয়ার্ডের মোট ১৬টি গোরস্থানের অভ্যন্তরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ১৮, ২০, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০ নং ওয়ার্ডের মোট ১৫টি গোরস্থানের অভ্যন্তরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৩৫ শতাংশ।

রাসিক আরও জানায়, নগরীর পাঠানপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ এবং হরিজন পল্লী মোট ২টি জলাশয়ের প্রতিরক্ষামূলক সীমানা প্রাচীর, সৌন্দর্য্য বর্ধণমূলক বেঞ্চ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। নগরীর ২, ৩, ৫, ১৬ নং ওয়ার্ডের মোট ৮টি গোরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শেষ হয়েছে। ১৩, ১৪, ১৫ ও ১৭ নং ওয়ার্ডের মোট ৭টি গোরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ। ১৭ নং ওয়ার্ডের ১২টি গোরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ১৮টি ঈদগাহ, লেবার অফিস ও ২টি অন্যান্য অবকাঠামোতে মাটি ভরাট কাজ শেষ হয়েছে। বিভিন্ন গোরস্থানে ৮টি জানাজা সেড ও ১৪টি ওজুখানা নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন গোরস্থানে ৭টি জানাজা সেড ও ১৪টি ওজুখানা নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর-ইসলাম তুষার বলেন, সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের দিক-নির্দেশনায় ও পরিকল্পনায় রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় একযোগে নগরী ৪৩টি গোরস্থান ও ২৮টি ঈদগাহের উন্নয়ন করা হয়েছে। বড় ঈদগাহগুলো ইসলামিক স্থাপত্যশৈলীতে দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। রাজশাহী কেন্দ্রীয় ঈদগাহের কাজও চলছে।

রাজশাহী উলামা কল্যান পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল গণি বলেন, রাজশাহীতে একযোগে এতোগুলো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন আগে কখনো হয়নি। সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের ঈদগাহ ও গোরস্থানের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। গোরস্থান ও ঈদগাহের দৃষ্টিনন্দন সীমানাপ্রাচীর, ফটক, ঈদগাহ, ওজুখানা, জানাযা সেড ইত্যাদি উন্নয়ন করেছেন, এটি সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।

সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গত ৫ বছরের মধ্যে মাত্র আড়াই বছর কাজ করতে পেরেছি। কারণ করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে আড়াই বছর তেমন করা করা সম্ভব হয়নি। তবে এই অল্প সময়ের মধ্যে রাজশাহীর যে উন্নয়ন করেছি, তা দৃশ্যমান।

নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণ, বিনোদনকেন্দ্রের উন্নয়ন, ড্রেন, ফুটপাত নির্মাণ সহ অনেক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এরমধ্যে নগরীর ঈদগাহ ও গোরস্থানেরগুলোর উন্নয়ন করা হয়েছে। রাজশাহীর উন্নয়নে আরো কিছু কাজ বাকি আছে। আমি আগামীতে নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে চাই। রাজশাহীকে আরও সুন্দর ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চান আসন্ন রাসিক নির্বাচনের নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থী।

 

 

আরপি/এসআর-০৫


বিষয়: রাসিক


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top