রাজশাহী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

বাড়ি পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মুখে ফুটলো হাসি


প্রকাশিত:
৩০ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৪১

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:০৬

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

মোসাঃ মোমেনা খাতুন স্বামী সন্তান নিয়ে ভোলাহাটের হলিদাগাছী-গোহালবাড়ীহাটের সরকারী রাস্তার পাশে কুঁড়ে ঘরে মাথা গুঁজার ঠাই নেন। কিন্তু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হলে তাঁর বাড়ীটি ভেঙ্গে দেয়া হয়। তাঁর সাথে সাথে একই স্থানে আরো ২০/২৫টি বাড়ী উচ্ছেদ করা হয়। এমন সময় মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ২য় পর্যায়ে বরাদ্দকৃত গৃহের উপকার ভোগী অর্থাৎ‘ক’ শ্রেনির ৪১১ পরিবারকে পুনর্বাতব্য করার জন্য যাচাই বাছাই করা শুরু হয়।উচ্ছেদ অভিযানে যাদের বাড়ী ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে তাদেরকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ী দেয়ার তালিকা প্রস্তুত শুরু হয়।

এর মধ্যে উচ্ছেদ অভিযানে বাড়ী ভেঙ্গে যাওয়ায় মোসাঃ মোমেনা খাতুনের নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের বাড়ী বরাদ্দ পান। যার উপজেলা প্রশাসনের চূঁড়ান্ত যাঁচাই বাছাই তালিকার ক্রমিক নং ১৪৪। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে তাঁর নামের বাড়ী সংশ্লিষ্ট ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ কামাল উদ্দিন মোসাঃ মোমেনার কাছে টাকা চেয়ে তাঁর চাহিদা মত টাকা দিতে না পারায়মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অপর একজনকে বাড়ীটি দিয়ে দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় একই ওয়ার্ডের মোসাঃ মমতাজ বেগমের জাতীয় পরিচয়পত্র মোমেনার নামে জালিয়াত করে ওর্য়াড মেম্বার মোঃ কামাল উদ্দিন মোসাঃ মমতাজ বেগমকে বাড়ীতে তুলে দেন।

বাড়ীটি পেতে মোসাঃ মোমেনা খাতুন দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোন কুলকিনারা করতে না পেরে অবশেষে গত সেপ্টেম্বরের ২৯ তারিখ ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেন। তাতেও কাজের কার হয়নি। অবশেষে জাতীয় আঞ্চলিক ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসেন প্রশাসন। উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছুটে যান অসহায় মোমেনার কুঁড়ে ঘরে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে মোমেনা ও আমেনাকে বাড়ী দেয়ার নামে স্থানীয় মেম্বার মোঃ কামাল উদ্দিন ৮হাজার ও ৫ হাজার টাকা নেয়ার সত্যতা পেয়ে তাঁকে টাকা ফেরৎ দিতে বাধ্য করান। পরে মমতাজ বেগমের জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতের বিষয়টি নিয়ে মেম্বারকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাঁর কার্যালয়ে আটক করে নিয়ে যান। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ সময় মোমেনাকে বাড়ী করে দেয়ার কথাও জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পাল।

গত ২৮ নভেম্বর হলিদাগাছী -গোহালবাড়ী রাস্তার পাশে বাড়ী নিমার্ণের জন্য মিস্ত্রী কাজ শুরু করায় অসহায় মোমেনা ও তাঁর স্বামীর মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। মসরজমিন গেলে মোসাঃ মোমেনা বলেন, আমার নামের বাড়ী মেম্বার ভোটার কার্ড জাল করে মমতাজকে উঠিয়ে দিলে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিাকার চেয়ে দৌড় ঝাঁপ করি। কোন কুল কিনারা না পেলে সাংবাদিক আসে। সাংবাদিক পেপারে আমার কষ্টের কথা প্রকাশ করলে আমি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ী পায়। বাড়ী পেয়ে আমি খুব খুশি। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর বাবার জন্য দোয়া করবো। ইউএনও স্যার ও সাংবাদিকদের জন্য আমি দোয়া করবো।

মোমেনার স্বামী শাহজামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ী পেয়ে আমরা খুব খুশি। পরিবারের সবাই মিলে পাকা বাড়ীতে বসবাসের আশা করিনি। এখন পরিবারের সবাই পাকা বাড়ী বসবাস করতে পারবো বলে আনন্দ প্রকাশ করেন।

 

 

 

আরপি/এসআর-১০



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top