রাজশাহী বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১

বাবার স্মৃতি রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ রেনুর


প্রকাশিত:
২৬ অক্টোবর ২০২১ ২২:১৩

আপডেট:
২৬ অক্টোবর ২০২১ ২২:১৫

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

আস্থা, ভরসা আর পরম নির্ভরতার অন্য নাম বাবা। বাবা এমন এক বৃক্ষ, যে বৃক্ষের ছায়ায় আস্থার খোরাকে বেঁচে থাকার শক্তি পায় সন্তান। প্রতিটি সন্তানের কাছেই বাবা মানে শক্তি আর সাহস। বাবার প্রতি সন্তানের চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে প্রতিদিনই। যা বিশেষ কোনো দিবসের মাঝে আবদ্ধ রাখা কষ্টসাধ্য।

বাবার স্মৃতি রক্ষায় নানা রকম উদ্যোগ নেন সন্তানেরা। তবে নগরীর তালাইমাড়ি এলাকার বাসিন্দা মতিউর রহমান রেনু। বাবার স্মৃতি রক্ষায় ভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। পনের বছর আগে বাবার হাতে কেনা বাইসাইকেলকে ঘিরে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। বাবার কাছ থেকে পাওয়া উপহারের সাধারণ সাইকেলটিকে সাজিয়ে নতুন রূপ দিয়েছেন তিনি। বাবার মৃত্যুর আগে একবার হারিয়ে গেলেও অনেক খোঁজাখুঁজির পর ফিরে পায় শখের সাইকেলটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, হরেক রকম বাতি দিয়ে পুরো সাইকেলটিই সাজিয়েছেন এই শৌখিন সাইকেল চালক। পিতলের লাইট হোল্ডারে লাগানা হয়েছে ৫ রকমের গাড়ির বাতি। সাইকেলে লাগানো বেলটিও পিতলের তৈরি। সামনে-পিছনে তাকানোর জন্য লাগানো হয়েছে ৪ টি লুকিং গ্লাস। তামার পাইপের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে পিতলের প্রদীপ। সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য লাগানো হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেলের হর্ণ। পিক আপ হ্যান্ডেলের পাশাপাশি ছোট শিশুকে বসানোর জন্য ছোট একটি আসনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে সাইকেলটিতে।

সাইকেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর আগেও আমার একটি সাইকেল ছিল। সেটা হারিয়ে যাওয়ার পরে এটি আমার বাবা কিনে দেন। নতুন সাইকেল কিনে দেওয়ার সময় যত্ন সহকারে বাবার স্মৃতি রাখতে বলেছেন বলেও জানান তিনি। সাইকেল সাজানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ধীরে ধীরে দু একটা করে শো লাইট লাগাতে লাগাতেই নতুন রূপ পেয়েছে সাইকেলটি। একটু একটু করে সাজানো সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে দীর্ঘ ৬ বছর। সাইকেলের যত্ন নিতেও কমতি নেই রেনুর। সামান্য বৃষ্টি হলেও বাহিরে বের করা থেকে বিরত থাকেন তিনি।

তিনি জানান, নানা রকম উপকরণ দিয়ে সাজাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৯ থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা। সাজানোর পর একাধিক ব্যক্তি কিনতে চেয়েছিলেন সাইকেলটি। তবুও বাবার কথা রাখতে বিক্রি করেন নি পিতার শেষ স্মৃতিটুকু। পরবর্তী পরিকল্পনা হিসেবে তিনি আরও জানান, যাতায়াতে দ্রুত ও সহজসাধ্য করতে মটর লাগানোর চিন্তা করছেন তিনি। অল্প সময়ের মধ্যেই লাগাতে পারবেন বলেও আশাবাদি তিনি। এছাড়াও আগামীতে একটি মোটরসাইকেল কিনতে চান রেনু। অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে এই ইচ্ছাটুকুও পূরণ করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

 

 

আরপি/এসআর-০৯



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top