নাটোর
ছাত্রলীগের হাতে দুই চিকিৎসক লাঞ্ছিত
নাটোরে ছাত্রলীগের হাতে দুই চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার নাটোরের বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী চিকিৎসকদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের লোকজন তাদেরকে লাঞ্ছিত করেছে। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাদের কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করা হয়েছে।
হাসপাতালের ডা. রাসেল এবং মেডিকেল অফিসার আবদুল্লাহ মোহাম্মদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে একজন যুবক রোববার দুপুর ২টার দিকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করার জন্য ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে হাসপাতালে ডা. রাসেলের কাছে এসেছিলেন। সে সময় চিকিৎসক রাসেল ১৭ নম্বর কক্ষে বহির্বিভাগের রোগী দেখছিলেন।
তারা বলেন, রোগীর চাপ বেশি থাকায় তিনি ওই যুবককে বিকাল ৩টার পরে আসতে বলেন। সে সময় বেরিয়ে গিয়ে কিছুক্ষণ পরে ১৫-১৬ জনের একটি দল নিয়ে যুবকটি হাসপাতালে ফিরে আসেন। সে সময় ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ এবং ডা. রাসেল একই কক্ষে ছিলেন।
ওই যুবকরা নিজেদের ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে দাবি করেন এবং চিকিৎসকরা ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে কেন টাকা চেয়েছেন এমন জানতে চান।
চিকিৎসক কোনো টাকা চাননি দাবি করলে বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়।
এ সময় যুবকদের কয়েকজন এসব কথপোকথন ভিডিও করতে থাকেন। উল্টো চিকিৎসক আবদুল্লাহ মোহাম্মদও ভিডিও করতে থাকলে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়।
সেসময় পুলিশ ডাকতে চাইলে আবাসিক চিকিৎসক ডা. রাসেলের কাছে থাকা সরকারি ও ব্যক্তিগত দুটি মোবাইল ফোনও তারা কেড়ে নিয়ে বাইরে চলে যায়। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন ডা. রাসেল।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলামকে মৌখিক ও পরে লিখিতভাবে জানান। এ ছাড়াও তারা বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনকেও জানিয়েছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের উপজেলা সভাপতি-সেক্রেটারিসহ অনেককেই দেখেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে, টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট দিয়েছে।
তিনি জানান, তার হাসপাতালে চিকিৎসকদের ১৪টি পদের মধ্যে তিনিসহ মাত্র ৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন। আমাদের হাসপাতালে নামে রয়েছে ৭ জন।
তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে মৌখিকভাবে সিভিল সার্জনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়গুলি জানানো হয়েছে। দুপুরে ছাত্রলীগের সঙ্গে চিকিৎসকদের যে ঘটনাটি ঘটে তা তিনি তৎক্ষনাৎ তার অফিসে বসিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে এমপি শহীদুল ইসলাম বকুল সমর্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মোল্লা জানান, এমন ঘটনা তিনি শুনেছেন। তবে এসবের সঙ্গে তাদের কোনো সর্ম্পক নেই।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স্বপন কুমার চৌধুরী বলেন, হাসপাতাল থেকে এমন কোনো অভিযোগ তারা পাননি। তবে যে কোনো বিষয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানালে তাৎক্ষণিকভাবে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
আরপি/এসআর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: