রাজশাহী বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১


সিংড়ায় চিরকুট লিখে বিদ্যুতের মিটার চুরি!


প্রকাশিত:
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৭:৩৮

আপডেট:
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৯:৫৫

ছবি: সংগৃহীত

মিটার পাবে চিরকুটে মোবাইল নম্বর লিখে রেখে নাটোরের সিংড়ায় বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করছে দুর্বৃত্তরা। গত সাত দিনে উপজেলায় ১০টি শিল্প মিটার চুরি হয়েছে।

এতে উপজেলার শতাধিক চাতাল মালিকসহ তিন শতাধিক বৈদ্যুতিক শিল্প গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে আবার মিটার চুরি যাওয়ার ভয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে।

সিংড়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস ও গ্রাহক সূত্রে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে উপজেলার জামতলী বাজার এলাকার একটি ‘স’ মিল থেকে দুটি মিটার চুরি যায়। ‘মিটার পাবে’ একটি কাগজের চিরকুটে মোবাইল নম্বর লিখে রেখে যায়। পরে প্রশাসনের নাকের ডগায় পৌর শহরের পাটকোল মহল্লার মা রাইচ মিল, মামুন রাইচ মিল, মায়া রাইচ মিল ও বাসস্ট্যান্ড এলাকার চারটি বরফ মিল ও ‘স’ মিল থেকে একই অভিনব কায়দায় চিরকুট লিখে রাতের যে কোনো এক সময় মিটার চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

আর মিটার চুরি যাওয়া স্থান থেকে প্রাপ্ত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করলে চুরির মিটার ফেরৎ দেয়া হবে বলে জানায় দুর্বৃত্তরা। পরে বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানানো হলে তাদের কিছুই করার নেই বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

আর মিটারের সমপরিমাণ টাকা জমা দিলেই লাগানো হবে নতুন মিটার। তবে অনেকেই আবার তাদের কথা মতো বিকাশ নম্বরে টাকা দিয়ে মিটার ফেরতও পাচ্ছেন। এতে করে গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সিংড়া উপজেলা বণিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজুর রহমান সবুজ বলেন, একটি শিল্প মিটারের মূল্য ২৪ হাজার থেকে সোয়া লাখ টাকা। এই দামি মিটারগুলো কাম্পাসের ভেতরে লাগানোর ব্যবস্থা করলে অনেকাংশে চুরি বন্ধ করা সম্ভব হবে।

আর যাদের মিটার চুরি গেছে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি তো আছেই, সঙ্গে গ্রাহকদের ব্যবসায়িক ক্ষতি ও নাজেহাল হতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

মিল মালিক সমিতির সভাপতি আশাদুজ্জামান বাচ্চু বলেন, আমাদের মিটারের কোনো নিরাপত্তা নেই। এভাবে মিটার চুরি হতে থাকলে আমাদের ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হবে।

নাটোর পল্লী সমিতি-১ সিংড়া জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলায় মোট ৩৪৫ জন শিল্প মিটার রয়েছে। গত সাত দিনে উপজেলার ১০টি শিল্প মিটার চুরি হয়েছে। আর এ বিষয়ে সিংড়া থানায় একটি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পক্ষ থেকে লিখিত এফআই আর করা হয়েছে।

আর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রেজাউল করিম বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। মিটার চুরি গেলে পল্লী বিদ্যুতের কোনো দায়ভার নেই। পল্লী বিদ্যুৎ চলে একটি নীতিমালার ওপর। তবে আমরা গ্রাহককে দ্রুত সার্ভিস দিতে প্রস্তুত আছি। আর এটা দেখার দায়িত্ব আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাজ।

তিনি আরও বলেন, চুরির থেকে উদ্ধারকৃত মিটারের বিষয়ে বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। তারা শুধু এখন ৮০০ টাকা জমা দিলে আপাতত মিটার লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে। আর যাদের মিটার পাওয়া যায়নি তাদের সমপরিমাণ টাকা জমা দিতে হবে।

সিংড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই এর সঙ্গে জড়িত চক্রকে আটক করা সম্ভব হবে।

 
 
আরপি/এএস
 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top