রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

শিবগঞ্জে প্রকল্পের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে আ.লীগের সংঘর্ষ, আহত ৫


প্রকাশিত:
২৮ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৪৫

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৩২

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দের ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এই সংঘর্ষ ঘটে। এতে ছাত্রলীগের ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উপজেলা পরিষদের ৩টি কক্ষসহ কমপক্ষে ১০টি মটরসাইকেলে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। আর এ ঘটনায় এক পক্ষ অপর পক্ষকে দায়ী করছেন।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন- শিবগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আলীরাজ এবং মনাকষা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শামিম আলীসহ অন্তত ৫ নেতাকর্মী।

জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের হল রুমে আইনশৃংখলা সভা শেষে উন্নয়ন সভা চলছিলো। এ সময় সভার শেষ পর্যায়ে দুপুর দেড়টার দিকে ৪০ দিনের কর্মসূচি, কাবিখা, মাতৃত্বকালীন প্রকল্প, ইজিপিটি সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ও সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় তলার ভাইস চেয়ারম্যানের কক্ষসহ ৩ টি কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয় এবং ঘরের জানালা, কম্পিউটার, চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাব পত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব আল রাব্বি, স্থানীয় সাংসদ ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শিবগঞ্জ পৌর মেয়র কারিবুল হক রাজিন ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানসহ উপজেলার সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগন উপস্থিত ছিলেন।

অপর একটি সুত্র জানায়, সভার শেষ পর্যায়ে ৪০ দিনের কজের কর্মসূচিতে উপস্থিতির শতকরা ২০ ভাগ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ শিবগঞ্জ আসনের সাংসদ ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল এবং ১০ ভাগ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামকে দেয়ার প্রস্তাব দিলে বাধা দেন মনকষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা শাহাদৎ হোসেন খুররম। এ সময় সাংসদের সাথে চেয়ারম্যান খুররমের উচ্চস্বরে কথা কাটাকাটি হলে খবর পেয়ে সভা কক্ষের বাইরে উপস্থিত সাংসদ গ্রুপের সর্মথক এবং খুররম গ্রুপের সর্মথকদের মাঝে হাতাহাতি শুরু হয় এবং একপর্যায়ে কক্ষের আসবাবপত্র ভাংচুরে লিপ্ত হয় তারা। পরে খুররমের সমর্থকরা উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামের অনুসারীদের সাথে যোগ দিয়ে সাংসদ শিমুল গ্রুপের অনুসারীদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

ফলে দফায় দফায় ঘন্টাব্যাপি চলা সংঘর্ষে শিবগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আলী রাজ, মনাকষা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শামিম সহ অজ্ঞাত কয়েকজন আহত হন।

এ বিষয়ে সাংসদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দাবী সাংসদ শিমুলের সাথে সভায় চেয়ারম্যান খুররমের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাংসদের অনুসারীরা ভবনে ভাংচুর চালায় এবং তাদের অন্তত পাঁচ জন নেতা-কর্মীকে আহত করে।

আর সাংসদ শিমুলের দাবী শান্তিপূর্ণ সভা শেষে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়াকে অশালীন ও আক্রমনাত্নকভাবে মনাকষা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খুররম গালিগালাজ করলে ফোন করে তাদের (খুররম) সন্ত্রাসীদের ভবনের ভেতরে এনে ভাংচুর চালিয়েছে। যা অত্যান্ত দু:খজনক কাজ। তিনি তার সমর্থকের প্রায় ৮-১০টি মটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগ আনেন বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও কয়েক দফার সংঘর্ষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ ভবনকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলি বেগমের জানালা ভাংচুর করে।

তবে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপর (সদর সার্কেল) ইকবাল হোছাইন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল ও পৌর মেয়র কারিবুল হক রাজিন পুলিশের প্রটোকলে ঘটনাস্থলে ত্যাগ করেন।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top