রাজশাহী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠছে মধ্যরাতে, প্রস্তুত জেলেরা


প্রকাশিত:
২৯ অক্টোবর ২০২২ ০৩:৫৪

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৮

সংগৃহিত

অপেক্ষা শেষ হচ্ছ জেলেদের। ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে। রাত ১২টার পর জেলেরা নির্বিঘ্নে আবারও ইলিশ শিকার করতে পারবেন। ইলিশ শিকারের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখন জেলেরা। তারা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন।

চট্টগ্রামের জেলে কাদের মিয়া জানান, আমাদের জেলেরা সবাই তাকিয়ে আছে কখন সাগরে যেতে পারব। অনেকদিন পর যাব সবাই খুব খুশিতে আছে, ভালো মাছ পাইলেই আরও আনন্দ। অনেক জেলে কিস্তি এবং ধার-দেনা পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত। তবে মাছ ভালো পেলে এ সকল সমস্যা কেটে যাবে সে বিশ্বাসও আছে তাদের।

এদিকে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি অনুদান না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক জেলে। বরিশাল, মাদারীপুর, পটুয়াখালী জেলার কয়েক জেলে সরকারি অনুদান না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় কর্মচঞ্চলতা ফিরেছে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী পাড়ের জেলে পল্লিতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজাপুর উপজেলার পুখরীজানা এলাকার এক জেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা ২৫ কেজি চাল পেয়েছি। এ ছাড়া অনেক অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে নেমে নির্বিচারে মা ইলিশ ধরেছে। এখন কেমন মাছ পাব জানি না।

এর আগে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

ওই ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকে। ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য আহরণও এ সময় নিষিদ্ধ। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে এ সময় মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয় বলে জানায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

এই ইলিশ আহরণে বিরত থাকা জেলেদের সরকার ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা দেয়।

নিষেধ থাকলেও অনেক মাছ ধরেন এ বিষয়ে এর আগে মৎস্য প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী বলেছিলেন, নিষিদ্ধ সময়ে যারা মাছ ধরতে নামে তারা সবাই মৎস্যজীবী নয়। তাদের নেপথ্যে অনেক ধনী ব্যক্তি থাকে, ক্ষমতাবান ব্যক্তিও থাকে। ইলিশ সম্পদ রক্ষায় অতীতের মতো এবারও এসব অসাধু ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না। ইলিশ সম্পদ ধ্বংসকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।

এরপরও থামানো যায়নি নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ের মাছ ধরা। নিষেধাজ্ঞার সময়ও অনেক নদীতে জেলেরা মাছ ধরতে নামেন। অনেকে আটক হয়, জেল জরিমানাও দেন। নৌপুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হলেও রাতের আধারে অনেক লোভী জেলে নামেন মাছ শিকারে। মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান চলাকালে নৌ-পুলিশের উপরে জেলেদের হামলার ঘটনাও ঘটেছে। তবুও থেমে যায়নি প্রশাসন। অনেকস্থানে মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসন যৌথ অভিযান চালিয়ে কারেন্ট জাল জব্দ করে। জব্দ করা ওই জাল জনসম্মুখে পুড়িয়ে দেয়। জেলেদের নিবৃত্ত রাখতে নানা প্রচারণাও চালায়।

উল্লেখ্য, ২০০৩-০৪ সাল থেকে বাংলাদেশে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে।

আরপি/ এসএডি-4


বিষয়: ইলিশ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top