রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


সাপাহারে বাড়ি পাচ্ছে ১২০ ভূমিহীন পরিবার


প্রকাশিত:
২৩ জানুয়ারী ২০২১ ০০:২৯

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৩৬

ছবি: সংগৃহীত

“মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান” প্রকল্পের আওতায় নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার ১২০টি গৃহ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরই নতুন ঠিকানা পাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলো। উপজেলার ছয় টি ইউনিয়নে ১২০টি বাসগৃহ এলাকায় অত্যন্ত নয়নাভিরাম পরিবেশে এ গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। সারিবদ্ধ গৃহ নির্মাণ করায় ওই এলাকার রূপ বদলে গেছে। দেখলে মনে হয় এ যেন এক স্বপ্নপুরী'র কোন এক ছোট শহর।

এই স্বপ্নপুরীর বাসিন্দা হচ্ছেন এ উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন ১২০টি পরিবার। সৌন্দর্যমন্ডিত এ সকল গৃহের কারণে যেমন বদলে গেছে পূর্বেকার কদাচিত রূপ। তেমনি ভাগ্য বদলের কারণে অত্যন্ত খুশি এর সুফলভোগি ও এলাকাবাসী। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এ ঘরে সারাজীবন কাটাবেন ভূমিহীন ও গৃহহীনরা।

যারা আগে অন্যের জমিতে, কেউবা কারো বাড়ির এক কোণে, আবার কেউ রাস্তার পাশে ঝুপড়ী ঘরে অভিশপ্ত জীবন কাটাতেন। তারা আজ প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার গৃহ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। গৃহ পাচ্ছেন এমন এক সুফলভোগী মামুন (তিলনা) বলেন, তিনি তার পরিবারের সকলকে নিয়ে দাদীর বাড়িতে থাকতেন।

তিনি নিজের নামে বাড়ি পেয়ে অত্যন্ত খুশি। আরেক উপকারভোগী মালা রানী হাজরা (সাপাহার) গৃহকর্মী বলেন, আমাদের কোন জায়গায়-ঠাই ছিলনা, পরের জমিতে থাকতাম, ১/১টা (ছেলে-মেয়ে) আমি এ বাড়ি পেয়ে খুশি হইছি, বঙ্গবন্ধু আর প্রধানমন্ত্রীর জন্যে দোয়া করি। হাসিনা অনেকদিন বেঁচে থাকুক এ কামনা করি।

আরো কয়েক জন উপকারভোগীর সাথে কথা হলে তারাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ূ কামনাসহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্নার শান্তি কামনা করেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও ) মোঃ শোয়েব খান বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত গৃহগুলো ব্যয় ধরা হয়েছে ১লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা।

এসব গৃহে থাকছে ২টি বেডরুম, ১টি করে কিচেনরুম এবং ১ টি বাথরুম সহ সামনে খোলা বারান্দা। ওপরে কালার টিনশেডের শক্ত ছাউনি দিয়ে সেমিপাকা ঘরগুলো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ঘরগুলি নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই স্থানীয় সাংসদ মাননীয় সরকারের খাদ্যমন্ত্রী বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি মহোদয় নিয়মিতভাবে নির্মাণ কাজ স্বচ্ছ ভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সার্বিক দিক নির্দেশনা ও সহযোগীতা করে আসছেন।

ইউএনও মহোদয় নিজেই উপস্থিত থেকে এ কাজে সার্বক্ষণিক তদারকি করে আসছেন। নির্মাণ কাজের কোন প্রকার অনিয়ম না হয় সে দিকে তিনি সর্বদাই বিশেষ নজর রেখেছেন। সাপাহার উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) সোহরাব হোসেন বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে সরকারি খাস জমির উপর গৃহ নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পর্ণ হয়েছে।

প্রস্তুত করা হয়েছে জমির দলিলসহ ফোল্ডারগুলো, যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ১২০টি উপকারভোগীর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নির্মাণ কাজ পরিদর্শনকালে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কল্যাণ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার মুজিববর্ষে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষনাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই কার্যক্রম। প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীনরাই পাবেন এ ঘরগুলি।

এর ফলে পরিবারগুলি পাবে সামাজিক মর্যাদা ও নতুন ঠিকানা। ঘর বরাদ্দে কোন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ-সুবিধা না নিতে পারে সে জন্য সঠিকভাবে তদারকি করা হচ্ছে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন ঘরের কাজের মান শতভাগ ঠিক রাখতে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। আগামী ২৩শে জানুয়ারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে একযোগে এই ঘরগুলির উদ্বোধন করবেন। আমরা ইতিমধ্যে ঘরের মালিকদের দলিলও সুসম্পন্ন করেছি। পাশাপাশি ইতিমধ্যে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

উপকারভোগী পরিবারের সদস্যদের পানির সুবিধা নিশ্চিত করণের জন্য সাবমার্সিবল পাম তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে সংযোগ সড়কসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সাপাহার উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান হোসেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ১২০টি গৃহ পেয়ে যেমন খুশি হয়েছে উপকারভোগীরা, তেমন খুশি আমার এলাকাবাসীসহ আমি। আমরা সকলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি। 

আওয়ামী লীগ সরকার গরীব-দুঃখী মানুষের উন্নয়ন করে। তারই ধারাবাহিকতায় মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ২৩ শে জানুয়ারী শনিবার সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশব্যাপী ৬৯,৯০৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমি দলিল সহ গৃহ প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। এরপর স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারগন উপকারভোগীদের কাছে একটি করে ফোল্ডার হস্তান্তর করবেন বলে জানা গেছে।

আরপি / এমবি-৩



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top