আজ ব্রিকস সম্মেলন, সবার নজর দক্ষিণ আফ্রিকায়
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে আজ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে ১৫তম ব্রিকস সম্মেলন। সম্মেলনে ব্রিকসভুক্ত পাঁচ দেশ ছাড়াও যোগ দেবেন কয়েক ডজন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা। বৈঠক থেকে কী ধরনের ফলাফল আসবে সেই উচ্চ আশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এবারের সম্মেলন থেকেই জোটটিতে নতুন সদস্য যুক্তের ঘোষণা আসতে পারে। ৪০টিরও বেশি দেশ এরই মধ্যে ব্রিকসের সদস্য হওয়ার আবেদন করেছে। এটিই এবারের ব্রিকস সম্মেলনের প্রধান আকর্ষণ।
২০১৯ সালের করোনা মহামারির পর, এবারই প্রথম জোটের প্রতিনিধিরা স্বশরীরে হাজির হচ্ছেন এক মঞ্চে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে উঠে আসছে। শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোসহ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন মুদ্রা চালুর উদ্যোগ নেওয়া।
আরও পড়ুন: আ.লীগকে বারবার নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে: মেয়র লিটন
এ ছাড়াও ব্রিকসের এবারের সম্মেলনে আলোচিত হবে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোসহ জোট সম্প্রসারণের বিষয়টি।
বিশের পাঁচ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক শক্তি ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার জোট ব্রিকসের ১৫তম সম্মেলন ঘিরে গোটা বিশ্বের নজর এখন দক্ষিণ আফ্রিকায়। জোহানেসবার্গে ২২ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে সম্মেলন।
উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তবে এ সম্মেলনে সশরীরে অংশ নেবেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার পরিবর্তে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ অংশ নেবেন। পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি রায় দিয়েছে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। তাই দক্ষিণ আফ্রিকায় পুতিন উপস্থিত থাকলে তাকে গ্রেপ্তার করার একটি সুযোগ তৈরি হতে পারে।
সম্প্রতি চায়না ডেইলিতে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, অন্যান্য অনেক দেশ তাদের নিজস্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার উপায় হিসাবে ব্রিকসের দিকে তাকিয়ে আছে।
‘ব্রিকস ও আফ্রিকা: পার্টনারশিপ ফর মিউচ্যুয়ালি এক্সিলারেটেড গ্রথ, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইনক্লুসিভ মাল্টিলেটারেলিজম’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে।
এবারের সম্মেলনকে অন্য বারের তুলনায় ব্যতিক্রম বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে। থাকতে পারে বেশ কিছু চমক। বিশেষ করে জোট সম্প্রসারণের সম্ভাবনায় নিজেদের যুক্ত হওয়ার আশায় তাকিয়ে বিশ্বের অন্তত ৪০টি দেশ। সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ইরান, মেক্সিকো, এমনকি বাংলাদেশও রয়েছে এ তালিকায়। এতে যে কোনো দেশের সদস্য পদ পেতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে বলেই উঠে আসছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।
সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের আলাদা সাইডলাইন বৈঠকেও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এতে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক ছাড়াও অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন আলাদা বৈঠকে।
ব্রিকস সদস্য হওয়ার পর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। ব্রিকসে যুক্ত হওয়ার পর চীনে দক্ষিণ আফ্রিকার রপ্তানি চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। চীন পরিণত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার সবথেকে বড় বাণিজ্য সহযোগী রাষ্ট্রে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীসহ আট বিভাগেই হতে পারে বৃষ্টিপাত
‘ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল ডায়ালগ’ এর ‘সিনিয়র রিসার্চ এসোসিয়েট’ সানুশা নাইডু বলেন, এবারের সম্মেলনে নতুন সদস্য যুক্ত হওয়ার দিকেই চোখ থাকবে সবার।
মূলত চীন, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিকস বড় করতে সব থেকে বেশি আগ্রহী। বিশেষ করে মস্কো ও বেইজিং এখন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটি বড় অর্থনৈতিক জোট তৈরিতে মরিয়া। তবে ভারত ও ব্রাজিল এমন উদ্যোগে খুব বেশি আগ্রহী নয়। নাইডু জানান, নতুন সদস্য যুক্ত করার ক্ষেত্রে পাঁচ সদস্যকেই একমত হতে হবে।
আরপি/এসআর-০৪
বিষয়: ব্রিকস সম্মেলন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: