রাজশাহী মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল ২০২৪, ৪ঠা বৈশাখ ১৪৩১


ভরা বর্ষায় বৃষ্টির দেখা নেই, বিপাকে কৃষক


প্রকাশিত:
২৩ জুলাই ২০২২ ০৪:৪৪

আপডেট:
২৩ জুলাই ২০২২ ০৫:০৫

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর রাণীনগরে কৃষকরা কোন উপায় না পেয়ে নলকূপের পানি সেচ দিয়ে আমন ধান রোপনে শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে। ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না থাকায় আগাম জাতের ধান রোপন করতে পারছেননা কৃষকরা। ফলে ধানের চারা নিয়ে বেকায়দায় পরেছেন তারা।

আরও পড়ুন:ডিজেলের ৭ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসে থাকলে দিতে হবে ১৭৬ কোটি টাকা

রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস তথ্য মতে, চলতি আমন মোৗসুমে উপজেলা জুরে প্রায় ১৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে ধান রোপনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে বিনা-১৭, ব্রি-৯, ব্রি-৮৭,ব্রি ৩৪, স্বর্ণা-৫, ব্রি-৪৯ সহ বিভিন্ন জাতের ধান রোপন করবেন কৃষকরা। এসব ধান রোপনে ইতি মধ্যে প্রায় এক হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বীজ বোপন করা হয়েছে।

ইতি মধ্যে আগাম জাতের ধানের চারাগাছ লাগানর সময় হয়ে গেছে। বীজ বোপনের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই জমিতে রোপন করতে হয়। চারা গাছের অতিরিক্ত বয়স হলে ধানের ফলন কমে যায়। কিন্তু ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি না থাকায় চারার বয়স বেরে গেলেও পানি অভাবে রোপন করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে চরম বেকায়দায় পরেছেন তারা। তবে ইতি মধ্যে অনেক কৃষকরা গভীর নলকূপ থেকে পানি সেচ দিয়ে ধান রোপন শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন:এবার প্রেমের টানে কোরিয়ান যুবক বাংলাদেশে

মজিবর রহমান বলেন, আগাম জাতের ধানের চারা আরো প্রায় ৮/১০দিন আগে লাগানোর উপযুক্ত হয়েছে। বৃষ্টি হবে, হচ্ছে করে বৃষ্টি হচ্ছেনা। গভীর নলকূপ চালু না করায় পানিও পাওয়া যাচ্ছেনা। সময় মতো ধান রোপন করতে না পারলে ফলন ভাল হবেনা। তাই ধানের চারা নিয়ে চরম বেকায়দায় আছি।

কৃষকেরা আরো বলেন, সেচের পানি দিয়ে ধান চাষ করলে অতিরিক্ত খরচ বারবে। এতে শুরুতেই কিছুটা লোকসানের আশংকা থাকে। তাদের মতে,গত বোরো মৌসুমে ধান ভালো হলেও অধিক ঝড় - বৃষ্টির কারনে অনেক কৃষক পাকা ধান ঘরে তুলতে পারে না। ফলে ব্যাপক লোকসানে রয়েছে তারা।

কৃষক মাসুদ রানা বলেন,গত বোরো মৌসুমে ৬২ বিঘা জমিতে ধান রোপন করে প্রায় ৪লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে। প্রচন্ড খড়া ওপেক্ষা করে লোকসান কেটে ওঠতে বাধ্য হয়ে নলকূপের পানি সেচ দিয়ে ধান রোপন শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন:নওগাঁয় তরুণীর আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ায় মামলা

সংশ্লিষ্ঠদের মতে, বোরো মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টির ফলে পাকা ধান নুয়ে পরায় পানির নিচে পঁচে গেছে। ফলে চরমভাবে ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এতে শুধুমাত্র ধানের ফলন বিপর্যয়েই প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে কৃষকের। এসব লোকসান কেটে ওঠতে কৃষকরা আগাম চারা বোপন করলেও পানির অভাবে ধান রোপন করতে পারছেন না।


কৃষক আব্দুল মতিন বলেন,গত আমন মৌসুমে বিনা-১৭ জাতের আগাম ধান এলাকায় ব্যপক সারা ফেলেছে। আগাম জাতের এই ধানের ফলন যেমন সন্তোষজনক তেমনি অনেক আগেই ধান কেটে ওই জমিতে আলু-শরিষা আবাদ করা যায়। তাই ১২ বিঘা জমিতে ধান রোপনের জন্য চারা প্রস্তুত করেছি, কিন্তু বৃষ্টির পানি না থাকায় বাধ্য হয়ে নলকূপের পানি সেচ দিয়ে ধান রোপন শুরু করেছি।

কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, গত আমন মৌসুমে ধানে কিছুটা লোকসান হলেও শরিষা আবাদ করে বিঘাপ্রতি প্রায় ১৫/২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। সেই আসায় এবার প্রায় ১৯ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ধান রোপন করছেন।

আরও পড়ুন:বিয়ে করলেন পূর্ণিমা

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, জমিতে পানি থাকলে এতোদিনে প্রায় অর্ধেক পরিমান জমিতে ধান রোপন শেষ হতো। কিন্তু পানি না থাকায় কেবলমাত্র ২/৩শতাংশ জমিতে ধান রোপন শেষ হয়েছে। ইতি মধ্যে সবগুলো গভীর/অগভীর নলকূপ থেকে পানি সেচ দিয়ে ধান রোপনের জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে। বেশ কিছু নলকূপ থেকে পানি সেচ দিয়ে ধান রোপন শুরু করেছেন। আসা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ধরা-ভরি ধান রোপন শুরু হবে।

 

আরপি/ এ্সএইচ


বিষয়: নওগাঁ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top