কোরআন পোড়ানো নিষিদ্ধের আইন করছে ডেনমার্ক
জনসমক্ষে কোরআন পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নতুন একটি আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে ডেনমার্কে। প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানো এবং এর জের ধরে মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর নতুন আইনের উদ্যোগ নিয়েছে ডেনমার্ক সরকার। খবর বিবিসির।
ডেনমার্কের বিচারমন্ত্রী পিটার হামেলগার্ড বলেছেন, এসব ঘটনায় ডেনমার্কের ক্ষতি হয়েছে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তায় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে কোরআন বা বাইবেল নিয়ে অসদাচরণকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে দুই বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে।
দেশটির মধ্য-ডানপন্থী সরকার বলছে, এর মধ্য দিয়ে তারা বিশ্বকে একটি বার্তা দিতে চান।
আরও পড়ুন: ১৩ জেলায় ৬০ কি.মি বেগে ঝড়ো বৃষ্টির আভাস
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লারস লক রাসমুসেন বলেছেন, ডেনমার্কে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ১৭০টি বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি দূতাবাসের সামনে কোরআনের কয়েকটি কপি পোড়ানোর ঘটনাও আছে।
দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, সর্বশেষ ঘটনাগুলো সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।
ডেনমার্কের প্রতিবেশী সুইডেনেও কোরআন পোড়ানোর কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা নিরাপত্তাব্যবস্থার অবনতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। গত জুলাইয়ে ইরাকে সুইডিশ দূতাবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
উদারপন্থী আইন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার কারণে ডেনমার্ক ও সুইডেন প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করছিল। সুইডেন ১৯৭০ এর দশকে ব্লাসফেমি আইন বাতিল করে দেয়।
জুলাইয়ের শেষ নাগাদ কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পরেই কোপেনহেগেন এ বিষয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি যেসব দেশে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছে সদস্য দেশগুলোকে।
এরপরই ডেনমার্কের বিচারমন্ত্রী আইনে পরিবর্তন আনার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠেন। তবে এতে মৌখিক বা লিখিত মতামত বা ব্যঙ্গচিত্রকে কোনো টার্গেট করা হয়নি।
তবে তিনি বলেছেন, ধর্মীয় লেখা পোড়ানো হলে সেটি কোনো লক্ষ্য অর্জন করে না বরং শুধু বিভক্তি আর ঘৃণা ছড়ায়।
দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী জ্যাকব এলম্যান জেনসেন বলেছেন, মত প্রকাশের অধিকারই আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তি। তবে আপনাকেও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
তিনি জানান, কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডেনমার্কের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হলে তারা চুপ করে বসে থাকতে পারেন না।
আরও পড়ুন: ওটিতে রোগী রেখেই ‘সেলফিবাজি’!
এদিকে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বলেছেন, স্টকহোম তার প্রতিবেশী দেশের মতো কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, কারণ এতে করে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে দেশটির বিচারমন্ত্রী জানিয়েছেন, 'পাবলিক অর্ডার ল' রিভিউ করার একটি সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন।
ওদিকে ডেনমার্কের মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন আইনটির প্রস্তাব উত্থাপন করতে চান তারা। এ আইনের একটি ধারায় কোনো বিদেশি রাষ্ট্র, পতাকা বা অন্য কোনো প্রতীকের প্রকাশ্য অবমাননাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরপি/এসআর-০২
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: