রাজশাহী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


ওটিতে রোগী রেখেই ‘সেলফিবাজি’!


প্রকাশিত:
২৭ আগস্ট ২০২৩ ০৫:০০

আপডেট:
২৭ আগস্ট ২০২৩ ১৯:০৭

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে বেসরকারি উদয়ন নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের অপেশাদার আচরণ নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে গিয়ে এক প্রসূতি নারীর ডেলিভারির অপারেশন চলাকালে অপারেশন থিয়েটারের ভেতরেই মোবাইলে সেলফি তোলা শুরু করেন তারা। এমনকি সেই ছবিগুলো পরবর্তীতে ওই প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল ফেসবুক ওয়ালে পোস্টও করা হয়। যা জন্ম দিয়েছে নানা বিতর্কের।

সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে বিএসসি ইন নার্সিং সাইন্স কোর্সের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে পাঠায় উদয়ন নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ধাপে নারী ও শিশুদের সরকারি সেবাদান কেন্দ্র নগর মাতৃসদনে ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস করানো হয় তাদের। কিন্তু প্র্যাকটিসে গিয়ে মোবাইলে সেলফি তোলায় মত্ত হয়ে ওঠেন ৫ জন শিক্ষার্থী। এক প্রসূতি নারীর ডেলিভারির অপারেশন চলাকালে অপারেশন থিয়েটারের ভেতরেই রীতিমতো সেলফি তুলতে থাকেন তারা। সেই সেলফিতে দায়িত্বরত চিকিৎসক ছাড়াও অন্য সহযোগীদেরও দেখা যায়।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার মতো জনদরদি নেতা কে আছেন, প্রশ্ন কাদেরের

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, প্রসূতির অপারেশনের ছবির পাশাপাশি মুখমণ্ডলের দৃশ্যও রয়েছে বেশ স্পষ্ট। তাদের একজনকে নবজাতক কোলে নিয়ে সেলফির পোজ দিতেও দেখা গেছে। এ সময় রোগীকে শোয়ানো অবস্থায় ক্যামেরার দিকে তাকাতে বাধ্য করা হয়। তিনি ওই অবস্থাতেই নার্সিং শিক্ষার্থীদের ক্যামেরার দিকে তাকান। সেই ছবিগুলোই উদয়ন নার্সিং কলেজের অফিসিয়াল ফেসবুকে আপলোড করা হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘আজ নগর মাতৃসদনে উদয়ন নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন এবং সঙ্গে ছিলেন ডাক্তার রোকসানা পারভিন।’

তবে চিকিৎসকরা বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে না নিলেও রোগী ও তাদের স্বজনরা এ নিয়ে তুলেছেন আপত্তি। তাদের ভাষ্য, নার্সিং শিক্ষার্থীদের এসব কাণ্ডে বেশ বিব্রত হতে হয় তাদের। এ ধরনের কাজ করতে নিষেধ করলে উল্টো দুর্ব্যবহার করেন শিক্ষার্থীরা। রোগীর স্বজনরা জানান, এমন কাণ্ড নার্সিং পেশার জন্যও মর্যাদাহানিকর। রোগীর অপারেশন চলাকালে এভাবে ছবি তোলা কোনো ‘সুস্থ’ মানুষের কাজ হতে পারে না। যে কোন জায়গায় ছবি তোলার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার বলেও মত তাদের।

এ বিষয়ে উদয়ন নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজা খানমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। পরে আব্দুল্লাহ শৈকত নামে একজন নিজেকে ওই কলেজের এডমিশন কর্মকর্তা পরিচয়ে কল দিয়ে বলেন, ‘ছবি তোলার বিষয়টি ম্যাম জানেন না।’ অবশ্য কিছুক্ষণ পরই ছবিগুলো কলেজটির ফেসবুক আইডি থেকে ডিলিট করা হয়।

এ ব্যাপারে রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, তারা কার পারমিশনে আপলোড করেছে? রোগীর প্রাইভেসি আপলোড করবে কেন? তারা অনেক রিকোয়েস্ট করে যে শিখবে, কিন্তু আপলোড করবে কেন? এটা তো করতেই পারে না, আমি দেখছি।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনের মৃত্যু, ভর্তি ১৯৬০

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এ.জেড.এম মোস্তাক হোসেন বলেন, এটা তো অবশ্যই অনিয়ম। যেই রোগীই হোক, রোগীর পারমিশন ছাড়া কোনো ছবিই মিডিয়াতে আপলোড করা যাবে না। আর আপত্তিকর ছবি তো দেয়া যাবেই না, আইনসিদ্ধ না।

 

 

আরপি/এসআর-১৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top