সিরাজগঞ্জে ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, শহরজুড়ে আতঙ্ক
জেলা ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত সিরাজগঞ্জ। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো জেলা শহরে। জানা গেছে, দলীয় কোন্দলের কারণে নিহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়ের স্মরণে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শোকসভায় অংশগ্রহণ করা নিয়ে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় দু ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুরো শহরসহ খেদন সর্দারের মোড় ও বড়পুল এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিপুল পরিমাণ পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহমেদ জানান, জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে নিহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়ের স্মরণে শহরের এসএস রোডের দলীয় কার্যালয়ে শোকসভা চলছিল। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, সহ-সভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য্য, অ্যাডভোকেট বিমল কুমার দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হকের নেতৃত্বে প্রায় দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী স্মরণসভায় হামলা চালানোর চেষ্টা চালালে তাতে বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে।
তিনি আরও জানান, তাদের হামলায় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক নাঈম, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, আহত যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুলের পক্ষে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ সাইফুল্লাহ সাদি ও সুজিত রায় জানান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহমেদ গ্রুপ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হকসহ অন্তত ২৫/২০ জন আহত হন।
ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা জানান, প্রায় দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে শোকসভায় যোগদানের জন্য দলীয় কার্যালয়ে ঢুকছিলাম। এ সময় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহমেদের সমর্থকরা ঢুকতে বাধা দেয় এবং হামলা চালায়। আবু ইউসুফ সূর্য্য জানান, দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল চলাকালে ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবীব খোকার নেতৃত্বে দুই-আড়াইশো লোক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না জানান, স্মরণসভায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ শুনি ছাত্রলীগ নামধারী কয়েকজন প্রোগ্রাম বানচাল করার জন্য জেলা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ নেতা-কর্মীকে প্রোগামে যেতে বাধা দেয়।
এ নিয়ে বাধাদানকারী ওই ছাত্রলীগ নামধারীরা শহরের দোকানপাট ও বসতভিটা ভাঙচুর করে। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস জানান, শোকসভা চলাকালে ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকছিল।
এ সময় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহমেদ গ্রুপের নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়কে হত্যার জন্য তার পক্ষের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেয়। এ নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফোরকান শিকদার বলেন, জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত স্মরণসভা চলাকালে একাংশের নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার সময় তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়।
আরপি / এমবি-৯
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: