রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১


আদালত নিয়ে বিএনপি কথা বলার অধিকার রাখে না : তথ্যমন্ত্রী


প্রকাশিত:
৬ মার্চ ২০২০ ০৪:১৮

আপডেট:
১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪২

ছবি: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, যারা রাতের আঁধারে কোর্ট বসায়, প্রধান বিচারপতির দরজায় পদাঘাত করে, আদালত নিয়ে কথা বলার অধিকার তারা রাখে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় এ সম্মেলনে। সম্মেলনে ড. হাছান বলেন, ‘আপনারা জানেন গতকাল পিরোজপুরে একজন জজকে বদলী করা হয়েছে। মাননীয় আইনমন্ত্রী সেই বদলীর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি যেভাবে এটা নিয়ে গলাবাজি করছে, আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো একটু পিছনে ফিরে তাকানোর জন্য।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে ল’ ডিগ্রী নাই, এমন লোককেও তারা হাইকোর্টের বিচারক বানিয়েছেন। ধরা পড়ার পর পদত্যাগ করেছিলেন। বিএনপি আমলে একজন হাইকোর্টের বিচারক রাতের বেলা তার ঘরের মধ্যে কোর্ট বসিয়েছিল। দিনের বেলা না রাতের বেলায়। কোর্ট বসিয়ে দুই পাশে বিএনপির দুই নেতাকে নিয়ে বিএনপির পক্ষে রায় দিয়েছিল।’

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিএনপির আমলে তারা চীফ জাস্টিসের দরজার মধ্যে লাথি মেরেছে। বিএনপি আমলে তাদের এমপি পাপিয়া কোর্টের টাইপরাইটার বিচারকের দিকে ছুড়ে মেরেছিল। যারা রাতের বেলা কোর্ট বসায়, ভুয়া ডিগ্রীধারীদের বিচারক বানায়, প্রধান বিচারপতির দরজায় যারা লাথি মারে; তাদের আইন আদালত নিয়ে কথা বলার কোন অধিকার থাকে না।’

আরোও পড়ুন: রাজশাহীতে কোন গৃহহীন থাকবে না: রাসিক মেয়র

বাংলাদেশে আইন এবং আদালত স্বাধীন এবং স্বাধীন হওয়ার কারণেই আমাদের দলের নেতাদেরকে হাইকোর্টে এবং জজ কোর্টে হাজিরা দিতে হয় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আইন আদালত স্বাধীন বলেই পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তার স্ত্রী যিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুই দুইবারের এমপি, দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে হারিয়ে যিনি এমপি হয়েছেন, তার বিরুদ্ধেও মামলা হয়, তাকে জজকোর্টে হাজিরা দিতে হয়। দুদক যদি স্বাধীন না হতো, তার বিরুদ্ধে মামলাটাও হতো না। তাকে কোর্টে যেতে হতো না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের সাবেক মন্ত্রী আদালতে জামিন চাইতে গেছে, তাকে জামিন বাতিল করে তাকে জেলে যেতে হয়েছে। আমাদের দলের এমপিদেরকে নানা মামলায় হাজিরা দিতে হয়। এমনকি জেলেও যেতে হয়। আইন আদালত স্বাধীন বলেই এটি সম্ভবপর হয়েছে। যেটি বিএনপির আমলে ছিল না। বিএনপির আমলে আইন এবং আদালত পরাধীন ছিল। তাই আবারও বলবো যারা রাতের বেলা কোর্ট বসায় আর দিনের বেলা প্রধান বিচারপতির দরজা লাথি মারে আর যারা ভূয়া ল’ ডিগ্রীধারিদের বিচালক বানায় তাদের এই নিয়ে কথা বলার কোন অধিকার নাই।’

সেই সাথে দলের সদস্যদের বিনয়ী হতে আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আজকে পরপর তিনবার ১১ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতায়। ক্ষমতা থাকলে বিনয়ী হতে হয়। আমি আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বলবো, বিনয়ের কোন বিকল্প কোন দিন হবে না। আমি নেতাকর্মীরে বিনয়ী হওয়ার অনুরোধ জানাবো আমাদের আচরণে মানুষ যেন বিরক্ত না হয়। দল তাদের দায় দায়িত্ব নেবে না। যদি জনসমর্থন পেতে হয় তাহলে শুধু উন্নয়ন দিয়েই নয়, বিনয়ী আচরণ দিয়েও জনসমর্থন পাব। মানুষ যাতে আমাদেরকে ভালবাসে। ক্ষমতায় থাকলে ক্ষমতা প্রদর্শন করতে নাই।’

আরোও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ নওগাঁর আমীন উদ্দীন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মইনুদ্দীন মন্ডলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এমপি। তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভোট কারচুপির কথা বলে। আওয়ামী লীগ যদি ভোট কারচুপি করতো তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনের মধ্যে দুটিতে বিএনপি কিভাবে জয়লাভ করলো? তিনি আরও বলেন, বিএনপির দিন শেষ হয়ে গেছে। জনগণ আর বিএনপি- জামাতকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেনি, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার করেনি, তাদের মুখে আইনের শাসনের কথা মানায় না।’

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বেগম আখতার জাহান ও সাহাবুদ্দীন ফরাজী, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডবলু সরকার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামিল উদ্দীন আহ্ম্মেদ শিমুল এমপি ও ফেরদৌসি ইসলাম জেসি এমপি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ।

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top