রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


‘ফুরিয়ে আসছে’ রোহিঙ্গা তহবিল, উদ্বেগে জাতিসংঘ


প্রকাশিত:
২৪ আগস্ট ২০২২ ০৫:৫৪

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩৮

সংগৃহিত

বিশ্বের বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা থেকে প্রত্যাশিত সহায়তা না আসায় বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের গঠিত তহবিলে টান পড়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস রেফিউজি এজেন্সি (ইউএনএইচসিআর) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এ তথ্য।

ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার ভরসায় ২০২২ সালে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য ৮৮১ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছিল জাতিসংঘ। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই তহবিলে জমা পড়েছে মাত্র ৪২৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, শতকরা হিসেবে যা জাতিসংঘের প্রস্তাবিত অর্থের মাত্র ৪৯ শতাংশ।

দাতাগোষ্ঠীকে অর্থ প্রদানের আহ্বান জানিয়ে ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাংলাদেশে তাদের কাজের কোনো সংস্থান নেই এবং খাদ্য, আশ্রয় ও পয়োনিষ্কাশন সামগ্রীর জন্য তারা সম্পূর্ণভাবে জাতিসংঘের ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল।’

‘যদি (রোহিঙ্গা) তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে জাতিসংঘের পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। আর ত্রাণ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার অর্থ— বিপুল সংখ্যক অসহায় মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া।’

২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে বোমা হামলা করার অভিযোগ ওঠে সশস্ত্র রোহিঙ্গাগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে। সেই হামলার জের ধরে বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হামলা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সামনে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশসহ আশপাশের বিভিন্ন দেশে পালাতে শুরু করে। বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মিয়ানমারে জাতিগতভাবে রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতেই ২০১৭ সালে এই গণহত্যা চালিয়েছিল দেশটির সেনাবাহিনী।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর এই নিষ্ঠুর নির্যাতনের জেরে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ শুরু হওয়ার পর ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

করোনা মহামরির কারণে সেই মামলার বিচার কার্যক্রমে ছেদ পড়েছিল, সম্প্রতি ফের শুরু হয়েছে মামলার কার্যক্রম।

রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর নেতারা জানিয়েছেন—যদি মিয়ানমারের সরকার দেশটির ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু রেহিঙ্গাদের নাগরিকের মর্যাদা দেয়, কেবল সেক্ষেত্রেই তারা দেশে ফিরে যেতে পারেন।

তবে ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে এখনও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি মিয়ানমারে।

সূত্র: ঢাকা পোষ্ট

আরপি/ এসএইচ ০৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top