নারীর অঙ্গচ্ছেদন প্রথা নিয়ে মুখ খুললেন পোপ ফ্রান্সিস

‘ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন’ সংক্ষেপে ‘এফজিএম’। যে প্রথা পরিচিত ‘খাতনা’ নামে। বয়ঃসন্ধিতে মেয়েদের ‘ক্লিটরিস’ বা যৌন সুখানুভূতির প্রত্যঙ্গ কেটে দেওয়ার প্রথা যুগ যুগান্ত ধরে চলছে বিভিন্ন দেশে। অবিলম্বে প্রাচীন এই প্রথা বন্ধ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন পোপ ফ্রান্সিস।
রবিবার ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে একটি সভায় পোপ বলেন, “ফিমেল জেনিটাল মিউটেলেশন’ (লিঙ্গচ্ছেদ) এবং নারীপাচার তাদের সম্মানের পক্ষে অবমাননাকর।”
তিনি জানান, নারী সম্মান বিরোধী প্রথা ও কাজকর্ম করে এক শ্রেণির মানুষ অর্থ উপার্জন করছেন। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৩০ লাখ নারীকে এই প্রথার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যা তাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক। তাই এই প্রথা বন্ধে ব্যবস্থা নিক সরকারগুলো।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে কয়েকটি ধর্মগোষ্ঠীর মধ্যে ‘ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন’ (এফজিএম) বা ‘খাতনা’র রীতি প্রচলিত রয়েছে। কম বয়সে প্রতিবাদের ক্ষমতা তৈরি হওয়ার আগে ‘ক্লিটরিস’ বা যৌন সুখানুভূতির প্রত্যঙ্গটি কেটে দেওয়া হয়। গ্যাম্বিয়া সোমালিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশের মেয়েরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই প্রথার বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে ক্রমাগত সরব হচ্ছেন তারা। তাদের বক্তব্য, এই প্রথার মূলে রয়েছে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা। নারীদের কোনও যৌন অনুভূতি থাকতে নেই, এই মানসিকতা থেকেই ‘খাতনা’র প্রচলন। ২০১২ সালে জাতিসংঘ এই প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। একে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করে জাতিসংঘ।
রবিবার পোপ বলেন, “নারী অঙ্গচ্ছেদের এই প্রথা এখনও বহু দেশে প্রচলিত। এটা দুর্ভাগ্যজনক। নারীদের সম্মান, শরীর ও স্বাস্থ্যের প্রতি অবমাননাকর এই প্রথা। ‘ফিমেল জেনিটাল মিউটেলশন’- এর জন্য প্রতি বছর লাখ লাখ নারী জটিল অসুখে ভোগেন। যন্ত্রণা, ভয়, রক্তক্ষরণ, ঋতুকালীন সমস্যা, সন্তান প্রসবে অক্ষমতার মতো সমস্যা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন তারা। এবার শেষ হোক এই প্রথা।”
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার অন্তত ৩০টি দেশে নারী অঙ্গচ্ছেদ প্রথার প্রচলন রয়েছে। শুধু এই প্রথার ফলে চার লাখের বেশি নারীর জীবনে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। সেই তথ্য তুলে ধরে এই প্রথা বন্ধ করার ডাক দেন পোপ।
তিনি এও বলেন, ‘‘রাস্তায় এমন বহু নারী আমরা দেখি, যারা স্বাধীন নন। পাচারকারীদের দাসিবৃত্তি করে তাদের জীবন কাটছে। প্রতিবাদ করলে জোটে মার, চলে অকথ্য নির্যাতন।”
তাই, সমস্ত দেশের প্রধান এবং রাজনৈতিক নেতার কাছে পোপের আর্জি, অঙ্গচ্ছেদ প্রথা ও নারী পাচার, দুই-ই বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন আপনারা। সূত্র: ইউরোনিউজ
আরপি/এসআর-০৪
বিষয়: এফজিএম খাতনা পোপ ফ্রান্সিস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: