রাজশাহী বুধবার, ১৫ই মে ২০২৪, ২রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রাজশাহীতে সাত দফা দাবিতে তরুণদের স্মারকলিপি প্রদান


প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৪

আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৭

স্মারকলিপি

রাজশাহীর রাস্তায় যত্রতত্র গড়ে ওঠা অপরিকল্পিত সকল প্রকার যানবাহণের স্টপেজগুলোকে অবিলম্বে অপসারণ এবং শিরোইল বাস র্টার্মিনাল ও ঢাকা বাস টার্মিনালকে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল এ স্থানান্তর করা সহ সাত দফা দাবিতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার হুমায়ুন কবীরকে পৃথক পৃথক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। আজ রোববার (০১ সেপ্টেম্বর ) সকালে তাদেরকে স্মারকলিপি প্রদান করে রাজশাহীর তরুন সংগঠন ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস।


তরুণ সংগঠন ইয়্যাস সভাপতি মো. শামীউল আলীম শাওন ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম আকাশ এর যৌথ স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে যে, রাজশাহী মহানগরীর যানজট নিরসন ও যাত্রীদের উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে রাজশাহীর নওদাপাড়া এলাকায় ৭.৪১ একর জায়গার ওপর সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৪ সালের জুন মাসে স্থাপন করা হয় নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল। টার্মিনালটিতে এক সঙ্গে প্রায় ৫০০টি বাস দাঁড়াতে পারে। ২০১১ সালের জুনে পরিবহন মালিকদের কাছে টার্মিনালটি হস্তান্তরও করে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)। উদ্দেশ্য ছিল, নগরীর ভেতরে অবস্থিত শিরোইল বাস টার্মিনাল সরিয়ে শহরের বাইরে স্থাপন করা। কিন্তু এরপর প্রায় ১৫ বছর পার হলেও নওদাপাড়া বাসস্ট্যান্ডটি এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি। টার্মিনালটি শুধুই বাস দাঁড়ানোর জন্য যেন গ্যারেজে পরিণত হয়েছে এখন।

সেখান থেকে বাস ছাড়লেও নগরীর ভদ্রা গোল চত্ত্বরে এসে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থেকে উঠানো হচ্ছে যাত্রী। ফলে ভদ্রা গোল চত্ত্বরটিকে এখন বানানো হয়েছে বাস টার্মিনাল। রাতদিন এখানে বাস দাঁড়িয়ে থেকে হর্ন বাজাচ্ছে সজোরে। আর পাশেই অবস্থিত অভিজাত পদ্মা আবাসিক এলাকার মানুষরা পড়ছেন শব্দ দূষনে। আবার ওইদিক দিয়ে পথচারিসহ অন্যান্য যানবাহণ চলাচল করতে গিয়েই নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাস্তার ওপর টার্মিনাল গড়ে তোলার কারণে বলে উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে যে, রাস্তা দখল করে শুধু এই টার্মিনালটি-ই নয়, তালাইমারী মোড়, বিন্দুর মোড় ও গ্রেটার রোড রেল ভবনের মূল প্রবেশ পথ, বহরমপুর সিটি বাইপাস মোড়সহ মহানগরীর বিভিন্ন প্রবেশদ্বারের মুখে রাস্তার ওপরে গড়ে তোলা অস্থায়ী টার্মিনালের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে পড়তে হচ্ছে ব্যাপক ভোগান্তিতে। কোনো কোনো সময় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। রেল ভবনের মূল প্রবেশদ্বারের সামনের রাজশাহী-নওগাঁ ও রাজশাহীর তানোর ও বাগমারা উপজেলায় চলাচলকারী বাসগুলো যাত্রী উঠাতে দাঁড়িয়ে থাকে। তার পাশেই রাস্তার উপরেই রয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও থ্রি-হুইলারের স্টপেজ। এগুলোর কারণে সেখানে যানজট যেন লেগেই থাকছে।

স্বারকলিপিতে আরো বলা হয়েছে, সম্প্রতি সময়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন-ভদ্রা সড়কের দু’ধার দিয়ে রাস্তা দখল করে পাশাপাশি দু’লেনে এলোমেলো করে দাঁড়িয়ে রাখা হচ্ছে বাস। শুধু তাই নয়, সেখানেই রীতিমত বাসগুলোর ধোয়া-মোছা ও মেরামতের কাজও করছে বাসের কর্মচারীগণ। সড়ক দখল করে যাত্রী ওঠা-নামা ছাড়াও মেরামত ও ধোয়ার কাজ করায় সড়কের স্থায়ীত্ব কমছে। এক জায়গায় সবসময় ভেজা থাকার কারণে সড়কের বিটুমিন নষ্ট হয়ে পাথর উঠে যাচ্ছে। রাস্তায় খানাখন্দের পরিমাণ বাড়ছে। অন্যদিকে রাস্তার দু’ধার দিয়ে পথচারীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত করার জন্য গড়ে তোলা ফুটপাতও রয়েছে এসব পরিবহণ কর্মচারী ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে। এতে করে এ রাস্তায় প্রতিনিয়তই সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ফলে দূর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার জনগণকে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখিত সাতটি দাবি হলো :
১। রাজশাহীর রাস্তায় যত্রতত্র গড়ে ওঠা অপরিকল্পিত সকল প্রকার যানবাহণের স্টপেজগুলোকে অবিলম্বে অপসারণ এবং শিরোইল বাস র্টামিনাল ও ঢাকা বাস র্টামিনালকে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল এ স্থানান্তর করতে হবে।
২। শহরকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে শহরের ভেতর দিয়ে দূরপাল্লার বাস-ট্রাকসহ ভারী যানবাহণ চলাচল বন্ধ করতে হবে।
৩। পথচারীদের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিতের লক্ষ্যে নগরীর সকল ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে।
৪। ট্রাফিক আইন অনুযায়ী লেন মেনে সকল যানবাহণের চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
৫। যত্রতত্র যানবাহণ থামিয়ে রাস্তা দখল করে যাত্রী উঠানামা ও অবৈধ পার্কিং বন্ধ করতে হবে ।
৬। রাজশাহীর প্রতিটি স্থানে ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন ও সার্বিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) দ্বারা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
৭। রাস্তার ধারে দৃশ্যমান স্থানে ট্রাফিক আইন সম্পকে পর্যাপ্ত নির্দেশিকা প্রদান এবং এ সম্পর্কে জনসাধারণকে অবগত করতে প্রচারণা করতে হবে।

ইয়্যাস সভাপতি মো. শামীউল আলীম শাওন ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম আকাশ’র নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহীর জেলা প্রশাসক, মেয়র ও পুলিশ কমিশনারকে পৃথক পৃথক স্মারকলিপি প্রদান করে। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- ইয়্যাসের অর্থ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, সাংগঠনিক সম্পাদক সোলাইমান হোসেন রকি ও সাধারণ সদস্য রিনা খাতুন।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top