রাজশাহীতে ৫০ থেকে ১০০ ভাগ ভাড়া মওকুফ করলো যেসব মেস
করোনা সংকটে দেশজুড়ে চলছে সাধারণ ছুটি। বন্ধ রয়েছে আর্থিক ও অন্যান্য কর্মকান্ড। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া গরীব, নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন মধ্যবিত্তরাও। এমন পরিস্থিতিতে মেসভাড়া নিয়ে বিপাকে দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী।
দেশের বিভিন্ন জায়গার মত রাজশাহীতেও মেসভাড়া মওকুফ করার জন্য শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সোচ্চার হয়েছেন ভাড়া কমানোর দাবিতে।
তাদের দাবি, রাজশাহীতে লেখাপড়া করতে আসা শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়ে। অনেকেই প্রাইভেট পড়িয়ে, খন্ডকালীন কাজ করে লেখাপড়া করেন, নিজের খরচ চালান। এমন পরিস্থিতিতে মেসভাড়া দেয়া তাদের জন্য এবং অন্যদের জন্যও কষ্টকর।
শিক্ষার্থীদের এই দাবিকে সর্বপ্রথমে সমর্থন জানান রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবির জন্য মেসমালিক, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করার কথা জানান। এ বিষয়ে কথা বলেছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক। তিনি উভয় পক্ষকে সমর্থন করে সমঝোতার ভিত্তিতে এ সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানান। রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমানও এমন মতামত দেন। তারা জানান, সব মেস মালিকই সচ্ছল নন। তাই যাদের পক্ষে যতটুকু ভাড়া মওকুফ করা সম্ভব তারা যেন সেটা করেন- এমন আহ্বান জানান তারা।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে রাজশাহীর কিছু মেসমালিক ৫০-১০০ ভাগ পর্যন্ত ভাড়া মওকুফ করেছেন। রাজশাহীপোস্ট’কে ভাড়া মওকুফের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঐসকল মেসের বর্ডাররা। নিচে সেসকল মেসের তালিকা প্রকাশ করা হলো-
ভাড়া ৫০ ভাগ মওকুফকৃত মেসের তালিকা :
১। লাবনী ভিলা ছাত্রাবাসা, দরগাপাড়া
২। ধানসিঁড়ি ছাত্রীনিবাস, হেতেম খাঁ
৩। মনি ছাত্রাবাস, সবজি বাজার
৪। আদর্শ ছাত্রাবাস হেতেম খাঁ
৫। মামনি ছাত্রাবাসা, সপুরা
৬। নাহার ইসলাম ইসলাম ভিলা ছাত্রীনিবাস, গোরস্থান রোড, হেতেম খাঁ
৭। নাসিম মহল, হেতেম খাঁ
৮। আর. এইচ ছাত্রাবাস, দেবীসিংপাড়া, রুয়েট গেইট
৯। নূরজাহান ভিলা, বাগানপাড়া
১০। রাণী ভিলা ছাত্রাবাস, দরগাপাড়া (৬০ ভাগ মওকুফ করেছেন)
ভাড়া ১০০ ভাগ মওকুফকৃত মেসের তালিকা :
১। হাজী ছাত্রাবাস, হেতেম খাঁ
২। বিশাল ছাত্রীনিবাস, দরগাপাড়া
৩। বিশাল ছাত্রাবাস, সাহেব বাজার
৪। দোলন ছাত্রাবাস, হোসনীগঞ্জ
৫। বকুলতলা ছাত্রাবাস, হেতেম খাঁ
৬। খেয়া ছাত্রীনিবাস, পাঠানপাড়া
৭। অর্কিড ছাত্রীনিবাস, সাগরপাড়া
৮।পল্লব ছাত্রীনিবাস, রাজারহাতা
৯। সবুর ভিলা, দরগাপাড়া
১০। লিটন ছাত্রাবাস, হেতেম খাঁ
১১। রাতের মায়া ছাত্রাবাস, হেতেম খাঁ
১২। আরাফাত ছাত্রাবাস, হেতেম খাঁ
১৩। বাবর ছাত্রাবাস, হেতেম খাঁ
১৪। ভেনাস ছাত্রাবাস, মোন্নাফের মোড়
১৫। দর্পন-২ ছাত্রাবাস, দরগাপাড়া
১৬। সাধু ছাত্রাবাস, বিনোদপুর
অন্যদিকে, এখনো মেসভাড়া বিষয়ে কোন কথা বলেননি শহরের অধিকাংশ মেসমালিক। অনেকেই এখনো শিক্ষার্থীদের কাছে ভাড়া আদায় করছেন।
রাজশাহী কলেজের ছাত্রী লায়লা কামরুন নাহার বলেন, আমার মেস মালিক বললেন, বিকাশের দোকান খুললে ভাড়া দিয়ে দিতে। এ বিষয়ে কিছু বললে উনি বলবেন, ছিট ছেড়ে দেন।
রবিউল ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কি বলবো! আমার মেস মালিক আজকে ৫০ বার কল দিয়েছে। মেসভাড়া চাচ্ছেন।
আরপি/ এএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: