রাজশাহী শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

খাবার নাই, থাকার জায়গা নাই, ওষুধ খাব কী দিয়ে!


প্রকাশিত:
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১০

আপডেট:
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:০৬

সুখচাঁন আলীর পরিবার

‘থাকার জায়গা নাই, খাবার নাই, অষুধ খাব কি দিয়ে ! গত কয়েক বছর আগে সন্তানের ক্যান্সারের কারণে ভিটেমাটি টুকুও বিক্রি করে দিয়েও সন্তানকে বাঁচাতে পারিনি, ঘরবাড়ি, জায়গাজমি কিছুই নাই, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তেমন পরিশ্রমও করতে পারিনা। বিভিন্ন সময়ে এলাকার কমিশনার ও মেয়রের কাছে গেলে তাঁরা অনেক আশ্বাস দিলেও এখনো কোন সরকারি সুবিধা পাইনি। আমি অসুস্থ অবস্থায় বর্তমানে স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে চরম অসহায় জীবন যাপন করছি, ঔষধ কিনতে পারছিনা ‘ এভাবেই বলছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড চক এলাকার মৃত আরশাদ আলীর ছেলে সুখচাঁন আলী (৩০)

চরম শ্বাসকষ্টে ভুগলেও সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়ে আর ওষুধ কিনতে পারছেনা। ১৫ বছর বয়সে বাবা ও বড় ভাইকে হারিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন সুখচাঁন।

পৈতৃক এক টুকরো ভিটে মাটিতে কুঁড়ে তুলে বসবাস তার। ৪ বছর বয়সী সন্তান চোখের ক্যান্সারে আক্রান্ত । এলাকার প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির সামান্য আর্থিক সহযোগীতা ও আশে পাশে থেকে ভিক্ষা করে জোগাড় করা সামান্য অর্থ দিয়ে সন্তানের চিকিৎসা করানো সম্ভব হলো না। শেষ পর্যন্ত ভিটেমাটি বিক্রি করতে হয় ছেলের চিকিৎসার জন্য । কিন্তু জীবনের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করেও সন্তানকে বাঁচাতে পারেনি সুখচাঁন।

প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করার পরেও মারা যায় তার সাড়ে ৪ বছরের সন্তানটি। তারপর থেকে নিঃস্ব হয়ে পাশের এক ব্যক্তির আম বাগানের এক কোণে কোন রকমে বসবাস করতে থাকে সুখচাঁন। বর্তমানে স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে অন্যের জমিতে মানবেতর জীবন যাপন করছে । গত প্রায় ৫ বছর থেকে শ্বাস কষ্টে ভুগলেও অর্থের অভাবে তেমন চিকিৎসা নিতে পারেনি। স্ত্রী ও সন্তানদের খাবার জোগাড় করাটাই তার পক্ষে অসম্ভব।

এদিকে অন্যের বাগানে বসবাস করায় বাগানের মালিক ও প্রায়ই বলছেন অন্য কোথাও চলে যেতে। বর্তমানে তীব্র শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত সুখচাঁন গত ১ মাসে ৩ বার অপরের সহযোগীতায় রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসা নিলেও অর্থ না থাকায় ঔষধ ছাড়াই ফিরতে হয় তাকে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার মো: জুম্মন আলী বলেন, ছেলেটি আসলেই খুব অসহায়, ছোটকালেই বাবাকে হারিয়েছে, এরপর প্রথম সন্তানের চিকিৎসার জন্য ভিটেমাটি টুকু হারিয়েও বাঁচাতে পারেনি। আমি বিভিন্ন সময়ে স্বাধ্যমতো তার সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছি। বর্তমানে তার জন্য সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top