রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


বিএনপি ফাইনাল খেলার আগেই মাঠ ছেড়ে চলে গেছে: তথ্যমন্ত্রী


প্রকাশিত:
৫ নভেম্বর ২০২৩ ০০:৩০

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ২৩:৫৪

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি বলেছিল ২৮ অক্টোবর ফাইনাল খেলা হবে, কিন্তু তারা খেলার আগেই মাঠ ছেড়ে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। 

শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনীর অনুকরণে যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে এখন যারা গর্তে ঢুকেছে, তাদের গর্ত থেকে বের করে এনে শায়েস্তা করা হবে।’

আরও পড়ুন: আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে ৪ বাসে অগ্নিসংযোগ

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল ২৮ অক্টোবর ফাইনাল খেলা হবে, কিন্তু তারা খেলার আগেই মাঠ ছেড়ে চলে গেছে। পুলিশ একটা গুলিও ছোড়েনি, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজেই মির্জা ফখরুল সাহেবসহ সবাই মঞ্চ ছেড়ে চলে গেলেন, আর নেতাকর্মীরাও পেছনে পেছনে চলে গেলেন। অর্থাৎ খেলা শুরু হওয়ার আগেই মাঠ ছেড়ে চলে গেলো বিএনপি।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট নেতারা এখন জনশত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছেন। তারা গাড়িতে আগুন দেয়, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে। ডাকাত ডাকাতি করে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে না। চোর চুরি করে, সে মানুষের বাড়িতে আগুন দেয় না। এরা মানুষের সহায় সম্পত্তিতে আগুন দিচ্ছে। এরা জঘন্য ডাকাত এবং জঘন্য সন্ত্রাসীর চেয়েও বেশি জঘন্য। এরা জনগণের শত্রু। গাড়িচালক ভাইদের অনুরোধ জানাবো, গাড়িতে আত্মরক্ষার্থে প্রয়োজনে লাঠি ও লোহার রড রাখবেন। কোনো দুষ্কৃতকারী আক্রমণ করলে তাকে শায়েস্তা করবেন। আক্রান্ত হলে আক্রমণকারীকে প্রতিহত করতে আইনেও বাধা নেই। এই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি ভেবেছিল কেউ কোলে করে শিশুদের মতো ফিডার খাওয়াতে খাওয়াতে ক্ষমতার দোলনায় বসিয়ে দেবে। সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজে যারা পালিয়ে যায় তাদের সঙ্গে কেউ থাকে না। সুতরাং তারা কাউকে পাবে না।’

আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। সেজন্য জনগণের পাশে থাকতে হবে। পাড়া-মহল্লায় দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাসে আগুন দিতে যদি কেউ উদ্যত হয়, তাদের ধরে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পর্যন্ত এই গণশত্রু ও দুষ্কৃতিকারীরা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাবে। বিএনপি-জামায়াত এখন রাজনৈতিক দল নয়, এরা রাজনৈতিক কর্মীও নয়, তারা জনশত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। সেই কারণে তারা নির্বাচনকে ভণ্ডুল করতে চায়। আমরা চাই, তারা এই পথ পরিহার করে নির্বাচনে এসে তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুক। কিন্তু তারা জনগণকে ভয় পায়, তাই ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের মতো জনগণের ওপর এখন পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ শুরু করেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়ি ও বিচারপতিদের কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি কখনো হয়নি। স্বাধীনতার পূর্বকালে স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামকালেও বিচারপতির বাড়িতে কখনো হামলা হয়নি, কিন্তু তারা এই কাজটি করেছে। সুতরাং এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সব রক্তচক্ষুর মধ্যেও কখনো ক্ষমতার সঙ্গে আপস করেননি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তার জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্রত, রাজনীতি ক্ষমতায় যাওয়া, বিত্ত বৈভব ও খ্যাতি অর্জনের সোপান হওয়া উচিত নয়। যে আদর্শ বিশ্বাস করে সেই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য রাজনীতিবিদকে সাহসী হতে হয়। যে রাজনীতিবিদ সাহসী নয়, সে আপস করে। সেই রাজনীতিবিদ আপস করে হয়তো অনেক পদবি পায়, কিন্তু পরবর্তীতে ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যায় এবং আপসকামী হিসেবে সে চিহ্নিত হয়ে থাকে। এরকম বহু রাজনীতিবিদ আমাদের দেশে ছিল, এখনো আছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘আমার বাবা একজন আদর্শবান রাজনীতিবিদ ছিলেন, কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। তার কর্মগুণে মরেও আমাদের মধ্যে অমর হয়ে আছেন। তার জীবনের প্রতিটি কর্ম আজও চট্টগ্রামসহ সারা বাংলাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে আমার সুযোগ হয়েছে সারা বাংলাদেশ ভ্রমণ করার। যেখানেই গিয়েছি, আমার বাবার কথা বললেই মানুষের একটা আলাদা সম্মান আমি দেখেছি। আমি মনে করি আমার এবং আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় পাওনা।’

আরও পড়ুন: দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছি: প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই স্মরণসভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদিকা ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ।

 

 

 

 

 

আরপি/এসআর-০৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top