রাজশাহী শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১


‘রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ছিলাম, ক্ষমতায় এসে নিজের জন্য কিছু করিনি’


প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:৩১

আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:১১

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বলেন, রাষ্ট্রপতির মেয়ে ছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ছিলাম। ক্ষমতায় এসে নিজের জন্য কিছু করিনি। ছেলেমেয়েকেও এই শিক্ষা দিয়েছি। ধনসম্পদ টাকা-পয়সা কোনো কাজে লাগে না। আমিও চাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে। উপযুক্ত নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে উঠবে।

তিনি জানান, তিনি দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছেন, নিজের জন্য কিছু করতে ক্ষমতায় আসেননি। নিজের ছেলেমেয়েকেও সেই শিক্ষা দিয়েছেন জানিয়ে ছাত্রলীগকেও সেই শিক্ষা গ্রহণ করার তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত চলছে: কাদের

তিনি ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার সন্তানরা শিক্ষা লোন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমার সন্তানদের বলেছি, একটা সম্পদ দিতে পারব- শিক্ষা। অন্য কিছু দিতে পারিনি। তারা শিক্ষা লোন নিয়ে পড়াশোনা করেছে, শোধ করেছে৷ আমার আর রেহানার ছেলে মেয়েরা এভাবেই পড়াশোনা করেছে৷

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি মৃত্যুকে ভয় করি না। আমি এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করব। যে লক্ষ্য দিয়ে আমার বাবা এ দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সে লক্ষ্য পূরণ করব।

টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। বিএনপিকে 'অন্ধ' উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা কিছুই দেখে না। তাদের চোখ অন্ধ। আমি অনেক আই ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। আমি তাদের বলব- ১০ টাকার টিকিট কেটে চোখ দেখিয়ে আসতে। আসলে তাদের মনের দরজায় অন্ধকার।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। আর আমরা ছাত্রদের হাতে খাতা-কলম তুলে দিয়েছিলাম। সেজন্যই বলি অশিক্ষিতদের হাতে বাংলাদেশ চলতে পারে না। দেশের উন্নতি হতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা ও নির্যাতন করেছিল। তারা হাওয়া ভবন খুলে দেশটাকে লুটপাট ও জঙ্গির দেশ বানিয়েছিল। যার ফলে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। এসব কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল। কারণ, তাদের ওপর জনগণ আস্থা রাখে না। অথচ যখনই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে দেশের উন্নয়ন হয়েছে। কারণ, আমরা জনগণের জন্য কাজ করি।

আরও পড়ুন: রাজশাহীসহ বিভিন্ন এলাকায় ৬০ কি.মি বেগে ঝড়োবৃষ্টির পূর্বাভাস

‘ছাত্রলীগের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে যাবে’

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ছাত্রলীগের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এমনকি পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগই প্রথম প্রতিবাদ করে। এছাড়া ২০০৭ সালে ইমার্জেন্সির সময় ছাত্রলীগই প্রথম প্রতিবাদ করেছে। সেই এক-এগারোর সময়েও ছাত্রলীগ কোনো আপস করেনি। তারুণ্যের শক্তিতে দেশ এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে যে ছাত্রসংগঠন তৈরি তাদের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে যাবে।

বিদেশিদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এখন অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা দেখি মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু ১৫ আগস্টের পর তো আমরা বিচার চাইতে পারিনি। তবে কোনো বাধা আমাকে আটকাতে পারেনি। আমি মৃত্যুকে ভয় করিনি। মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরেছি। দেশে ফেরার পর সারাদেশ ঘুরেছি। দেখতে চেয়েছি বাবা-মার রক্ত নিয়ে তারা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পেরেছে কি না।

সরকারপ্রধান বলেন, পঁচাত্তরের পর যে ক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে।

ড. ইউনূসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটা ব্যাংকের এমডির জন্য বারবার আমাদের ওপর চাপ দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক আর একটা বড় দেশ। ইউনূসের কথা শুনে হিলারি ক্লিনটন বিশ্বব্যাংককে বলে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে দেখিয়ে দিয়েছি, বাঙালিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না।

সরকারপ্রধান বলেন, দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন জ্ঞানভিত্তিক দেশ। ছাত্রলীগকে স্মার্ট বাংলাদেশের কান্ডারি হওয়ার তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৭ জনের মৃত্যু, ভর্তি ২৩০৮

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গামাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রলীগ। সমাবেশ শুরুর আগে তাদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

আরপি/এসআর-১৮



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top