রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১


সরকার পতনের আন্দোলনে আলেমদের ভূমিকা চান ফখরুল


প্রকাশিত:
৯ অক্টোবর ২০২২ ০৪:৪৯

আপডেট:
৯ মে ২০২৪ ০২:৪৪

ছবি: সংগৃহীত

সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারবিরোধী আন্দোলনে অন্যান্য সব পেশার মানুষের পাশাপাশি আলেম-উলামার ভূমিকা কামনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব। সরকার অন্যায়ভাবে অনেক আলেমকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

শনিবার (৮ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ফখরুল বলেন, ‘সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। কারণ নতজানু পররাষ্ট্রনীতি। তাদের থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি পথ। সেটা হলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেই নির্বাচনে জনগণ যাদেরকে চান তারাই ক্ষমতায় আসবে।’

আজকে আমাদের দুঃখ হয়, শুধু ইসলামের পক্ষে থাকার কারণে অনেক আলেম-উলামাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব কথা কিন্তু আমরা ভুলে যাইনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারকে দ্রুত পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে জনমত তৈরি করার জন্য আলেম-উলামাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ যাদের চায় তারাই ক্ষমতায় যাবে। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমরা চাই বৈষম্যহীন সামাজিক মূল্যবোধের রাষ্ট্র।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেশে মানুষের নিরাপত্তা নেই। একজন মহিলা ফেসবুকে পোস্ট করায় রাতের বেলা তাকে ধরে নিয়ে যায়। আজকে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করেছে সরকার।’

ফখরুল বলেন, ‘শহীদ জিয়া দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে সম্মান দেওয়ার জন্য সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ও আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন সংযোজন করেন। বাংলাদেশের মানুষ হচ্ছে ধর্মভীরু।’

আলেম-উলামাদের গ্রেফতারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের দুঃখ হয়, শুধু ইসলামের পক্ষে থাকার কারণে অনেক আলেম-উলামাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব কথা কিন্তু আমরা ভুলে যাইনি। আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা ও পাঠাগার তৈরি করেছিলাম। মন্দিরেও পাঠাগার নির্মাণ করা হয়েছিল।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেশের ২৯টা সেক্টরকে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতির কোনো খবর যাতে প্রকাশ না হয়। এমনিতেই চ্যানেল ও পত্রিকাগুলোতে বলে দেওয়া হয় কোন খবর যাবে কোনটা যাবে না। খবর পর্যন্ত তারা নিয়ন্ত্রণ করে। আর প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। আসলে সরকার গোটা দেশে বর্গীদের মতো লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে চলমান কঠিন সময়ে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী সরকারকে মোকাবেলা শুধু একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এসবের দায় শেখ হাসিনা ও সরকারের। কারণ তারা বেআইনি হুকুম দিয়ে কাজ করাচ্ছে। দেশের প্রত্যেকটি থানার যারা বিএনপি করে এমন আটজন, অর্থদাতা পাঁচজনের নামের তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। এটা কি গণতন্ত্র?’

ফখরুল বলেন, ‘আজকে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি সংগঠন নিহত আবরারের স্মরণে কর্মসূচি পালন করতে গেলে তাদের মঞ্চ ভেঙ্গে দিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পিটিয়েছে। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা দিয়েছে। তারা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখলে নিয়েছে। দেশে অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’

সংগঠনের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদারের পরিচালনায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খাইরুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদসহ ওলামা দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরপি/ এসএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top