রাজশাহী শনিবার, ২৭শে জুলাই ২০২৪, ১২ই শ্রাবণ ১৪৩১


দুর্বার গণআন্দোলনে সরকারকে বিদায় করব: ফখরুল


প্রকাশিত:
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৫:৪২

আপডেট:
২৭ জুলাই ২০২৪ ০৫:৩৪

সংগৃহিত

দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকার তাদের পতন টের পেয়ে মরণ কামড় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ হামলা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এই সরকার নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ যখন তাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে, তখন তারা সভা সমাবেশে হামলা, আক্রমণ ও হত্যা করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। যাতে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকতে সোজা হয়, সহজ হয়। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের সমস্ত অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা ধ্বংস করে দিয়েছে নির্বাচনব্যবস্থা, তারা ধ্বংস করে দিয়েছে বিচারব্যবস্থা, ধ্বংস করেছে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, ধ্বংস করেছে মানুষের গণতান্ত্রিক বেঁচে থাকার উপায়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, তারা যতদিন এই দেশ শাসন করবে, এই দেশের মানুষের সমস্ত অর্জন তারা ধ্বংস করে দেবে।’

ফখরুল বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তে বোমা মারছে, রোহিঙ্গারা মারা যাচ্ছে। সরকার নীরব। কী প্রতিবার তারা করছে? জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয় বলেই তারা আজকে মুখ খুলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারছে না।’

‘সেজন্য আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই ভয়াবহ শক্তি, এই আওয়ামী লীগ যারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে, তাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করার জন্য, গণতন্ত্র আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য সারা বাংলাদেশে একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সব সময় বলি, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল। তাদের জন্ম সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে। সন্ত্রাস না করলে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। তারা গত ১৫ বছরে এই সন্ত্রাস করে ভয় দেখিয়ে ত্রাস করে ক্ষমতায় টিকে আছে।’

ফখরুল বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু হয়েছে, সাধারণ মানুষের তেল ডাল চালের দাম কমানোর জন্য। আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর জন্য, আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য, আমাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। তখন এই আওয়ামী লীগ সরকার তাদের পেটোয়া বাহিনী, তাদের হত্যাকারী বাহিনী নামিয়ে দিয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এর মধ্যে ভোলা জেলায় নূরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধানকে হত্যা করেছে। গতকাল আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমের ওপর হামলা করেছে, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ওপর হামলা করেছে, বরকত উল্লাহ বুলুর গায়ের রক্ত ঝরিয়েছে, তাবিথ আউয়ালের গায়ের রক্ত ঝরিয়েছে। আমাদের নারী নেত্রীদের ওপরও আক্রমণ করেছে, আঘাত করেছে, আহত করেছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘এখনও সময় আছে, পদত্যাগ করুন। পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। সংসদ বিলুপ্ত করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে জনগণ নতুন সরকার গঠন করবে। সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।’

রাজনৈতিক দল, সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার, যারা আজকে আমাদের সমস্ত অর্জন কেড়ে নিয়েছে, বাংলাদেশের আত্মাকে বিসর্জন দিয়েছে, তাদের সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’

রাজধানীর পল্লবী ও বনানীসহ দেশব্যাপী বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিবর্ষণ ও আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান।

ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু যৌথ

সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শিরিন সুলতানা, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীন প্রমুখ।

আরপি/ এসএইচ 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top