রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


‘জাসদই বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিয়েছিল’


প্রকাশিত:
২৬ আগস্ট ২০২২ ০৯:৫৬

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫৭

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন জানিয়েছেন, সিরাজুল আলম খান এবং পাকিস্তানপন্থী মেজর অবসরপ্রাপ্ত জলিলরা মিলে যে জাসদ সৃষ্টি করলেন, সেই জাসদই তো বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে নাটোরে এক শোক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও ২১ আগস্ট বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার শহীদদের স্মরণে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগ নাটোরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে এ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগস্টের সকল শহীদ এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ১৯৭১ সালে যারা পরাজিত হয়েছিল, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয় যারা মেনে নিতে পারেনি, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে—এটি যারা মানতে পারেনি, সেই একাত্তরের পরাজিত শক্তি, তাদের মূল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তান এবং এদেশের পরাজিত যারা তৎকালীন মুসলিম লীগসহ জামায়াত-শিবির যারা ছিল, তারা মিলেই এই চক্রান্ত করেছে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার সাথে স্বাধীনতার পরে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছাত্র সংগঠন থেকে যারা গিয়েছিলেন, তাদেরও একটা অংশের মদদ ছিল। দেশ স্বাধীন হবার মাত্র এক বছরও হয়নি, এদেশে একটি উগ্র স্লোগান দিয়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েম করার নাম করে তারা আলাদা প্লাটফরমে চলে গেলেন এবং তারা বলতে লাগলেন, ‘আওয়ামী লীগের হাতে উন্নয়ন হবে না, আওয়ামী লীগ ভারতঘেঁষা দল’।

মেয়র লিটন বলেন, তৎকালীন জাসদের যে নেতারা ছিলেন, যাদের অনেকে গত হয়েছেন, দুই-একজন এখনও বেঁচে আছেন। মূল যিনি পেছনে ছিলেন সেই সিরাজুল আলম খান ’৭৫ পরবর্তীতে সব সময় সুখে ছিলেন, এখনও সুখে আছেন। বৃদ্ধ হয়েছেন, মার্কিন একটা ইউনির্ভাসিটির ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে বছরে কয়েকবার যাওয়া-আসা করেন।

জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার এদেশীয় এজেন্টদের মধ্যে এক নম্বরে ছিলেন জিয়াউর রহমান। আজ সেই কারণে বাংলাদেশের মানুষ বলে একটা কমিশন গঠন করা হোক। শুধু জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া-এরাই শুধু নয়, আর কারা কারা এই হত্যাকাণ্ডের সুফলভোগী, আর কারা কারা বেনিফিশিয়ারি এটা জানবার অধিকার প্রত্যেকের আছে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লিটন বলেন, প্রতিক্রিয়াশীল চক্র সুযোগের অপেক্ষায় ছিল কখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে এই দেশটাকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করা যায় এবং একটা সময়ে এসে ১২০০ মাইলের যে ব্যবধান সেই ব্যবধানের দুই পাকিস্তানকে আবার এক করা যায় কিনা। এই ছিল একটা চক্রান্ত।

আরেকটা চক্রান্ত ছিল, ‘এই বাংলাদেশে থেকে ভারতবর্ষের বিরুদ্ধে যত রকম চক্রান্ত করা সম্ভব, সবই করতে হবে।’ এগুলো ছিল প্রেসক্রিপশন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশন, পাকিস্তানের প্রেসক্রিপশন, আরো কোন পরাশক্তির। সব মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র তৈরি করা হলো। তারপরেও বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা সম্ভব হতো না, যদি তিনি সাবধান বাণী গ্রহণ করতেন। বঙ্গবন্ধুকে শেষ বারের মতো বলা হলেও তিনি সাবধান বাণী বিশ্বাস করেননি। তাকে প্রাণ দিতো হলো। তার প্রাণের সাথে চলে গেল বাংলাদেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন বিষয়।

আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে রাসিক মেয়র বলেন, ভারত, ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যেভাবে ক্ষমতাশীন সরকার বহাল থেকে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেভাবেই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচন হবে। নির্বাচন কারো জন্য থেমে থাকবে না। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ, নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি প্রমুখ।

 

 

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top