রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


রাজশাহীর

বাঘায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মন্তব্য করায় ইউপি চেয়ারম্যানের ক্ষমা প্রার্থনা


প্রকাশিত:
২৪ জুলাই ২০২২ ০২:৪৮

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৬:৪৬

রাজশাহীর বাঘায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মন্তব্য করায় উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, ১০টাকা কেজিদরে চাল চাল নেওয়ার জন্য অন লাইনে নাম রেজিষ্ট্রেশনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়/ সেই মোতাবেক ওই ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে উপকারভোগী ছিল ১ হাজার ২০০ জন। এই কার্ড ডিজিটাল করার নির্দেশ দেন সরকার। সেই কার্ড এলাকায় মাইকিং করে ইউনিয়ন পরিষদে জমা নেয় চেয়ারম্যান। পরে এই উপকারভোগী কার্ডধারীদের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করে কার্ড নেওয়ার জন্য ঘোষণা দেন। পরে উপকারভোগীরা বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের জানান।

এ বিষয়ে বাউসা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদে এ নিয়ে ২০ জুলাই স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা ও উপকারভোগী কার্ডধারীরা একত্রিত হয়ে চেয়ারম্যানের কাছে হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও উপকারভোগীদের সাথে চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্য বাক বিতন্ডা হয় ৷

এ সময় চেয়ারম্যান উত্তেজিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী কী দেশ কিনে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামীগের নেতাদের মধ্যে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা চেয়ারম্যানের নামে মানববন্ধন ও মামলা করার প্রস্তুতি নেয় ।

এ বিষয়ে বাউসা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন বলেন, উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে হতদরিদ্রদের ১০ টাকা কেজি দরে চালের ১ হাজার ২০০ কার্ড বরাদ্দ হয়। এই কার্ড ডিজিটাল করার নির্দেশ দেন সরকার। সেই কার্ড এলাকায় মাইকিং করে ইউনিয়ন পরিষদে জমা নেয় চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান এই কার্ডধারীদের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিষদ করে কার্ড নেওয়ার জন্য ঘোষনা দেন।

এ নিয়ে ২০ জুলাই কার্ডধারীরা একত্রিত হয়ে চেয়ারম্যানের কাছে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীকে কুটুক্তি করে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা চেয়ারম্যানের নামে মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হয়।

অবশেষে শুক্রবার বিকেলে চেয়ারম্যান নিজেই ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে মামলা ঠেকাতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ, ইউপি সদস্যদের নিয়ে সমঝোতার আহবান জানান। সেখানে উপস্থিত নেতাদের সামনে চেয়ারম্যান ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, নয়টি ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ইউপি সদস্য প্রমুখ।

এ বিষয়ে বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান বলেন, দীর্ঘদিন থেকে অনেকেই হোল্ডিং ট্রাক্স বাকি রয়েছে। যাদের সামর্থ্য আছে তাদেরকে ট্রাক্স পরিশোধের জন্য বলা হয়েছিল। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে নেতারা জানান প্রধানমন্ত্রীর নির্দশনা ব্যতি রেখে ট্রাক্স আদায় করা যাবেনা। উত্তরে আমি বলে ছিলাম ট্রাক্সের টাকায় চালাচ্ছে দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দেশের বাহিরের কেউ নন। আমার এই কথাটাকে রুপ দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী কী দেশটা কিনে নিয়েছে। সর্বপরি জনপ্রতিনিধি হিসাবে নিজেই দায়ভার কাধে নিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে নিয়েছি। তবে জেনে হোক আর অজান্তে হোক, ঘটনাটির বিষয়ে আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি।

উল্লেখ্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক নুর মোহাম্মদ তুফান বাউসা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তাকে মনোনয়ন না দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিককে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। তার মনোনয়ন মানতে না পেরে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন। পরে দল থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়।

 

আরপি/হাসান


বিষয়: রাজশাহী


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top