রাজশাহী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


জেলে থেকেও অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় ক্যাসিনো খালেদ


প্রকাশিত:
২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৯

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:২৮

জেলে বসেই অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা ক্যাসিনো খালেদের
রাজধানীতে হোটেল ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার দায়ে প্রথম গ্রেফতার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া জেলে বসেই অবৈধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় আছেন। ফকিরাপুল, পল্টন, রামপুরা, খিলগাঁও, সবুজবাগ, বাবাবো, মতিঝিল, রমনাসহ আশপাশের এলাকায় গড়ে তোলা মাদকসহ অপরাধ জগত যেন হাতছাড়া না হয় সেজন্য বিশ্বস্তদের গারদে বসেই নির্দেশনা দিয়েছেন ক্যাসিনো সম্রাটের ঘনিষ্ট খালেদ। আন্ডারওয়ার্ল্ডের ১৫ জন কিলার ‘বসের’ (খালেদ) এই নির্দেশনা পেয়ে এরইমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। খালেদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।


খালেদ ঘনিষ্ঠ ওই সূত্র জানিয়েছে, প্রায় দুই মাস আগে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় গ্রেফতার হন খালেদ। ওই সময় তার ধারণা ছিল, দ্রুতই জামিনে মুক্ত হবেন তিনি। কিন্তু এখন তিনি বুঝতে পারছেন সহজে তার রেহাই নেই। এ কারণেই এই মুহূর্তে তার পরিকল্পনা- জেলে বসেই ক্যাসিনো, ইয়াবা, চাঁদবাজি ও অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করা। জেলে বসেই সহযোগীদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেছেন ফকিরাপুল, রামপুরা, খিলগাঁও, সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিল এবং রমনা এলাকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী মানিকের সঙ্গে যেন তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখে। দীর্ঘদিন ধরে মজুদ করা আগ্নেয়াস্ত্র যেন খোয়া না যায়, এ বিষয়েও ঘনিষ্ঠদের নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি।

খালেদের ঘনিষ্ঠ আন্ডারওয়ার্ল্ডের ভয়ংকর ১৫ কিলার এরইমধ্যে নির্দেশনা পেয়ে সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করেছেন। তাদের হাতেই রয়েছে খালেদের সব আগ্নেয়াস্ত্র। তারা আলোচিত সব হত্যা মামলার আসামি। এদের মাধ্যমেই খালেদ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।

জানা গেছে, খালেদের ১৫ ক্যাডারের হাতে রয়েছে শতাধিক আগ্নেয়াস্ত্র। এর মধ্যে ৪টি অত্যাধুনিক অভিজাত অস্ত্র একে-২২। অধিকাংশ অস্ত্রই চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাবর চট্টগ্রামে জোড়া খুনসহ ১৬টি মামলার আসামি। চট্টগ্রাম থেকে অস্ত্রের চালান আসত ট্রেনে। বাবরের বন্ধুর পল্টনের অস্ত্রের দোকান থেকেও খালেদের কাছে অস্ত্র যেত। অস্ত্র মজুদ করা হতো ঢাকার শান্তিনগরের চামেলীবাগের একটি বাসা এবং কমলাপুরের একটি বাসায়। চামেলীবাগের বাসাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক জনপ্রতিনিধির। আর কমলাপুরের বাসাটির মালিক একজন চিকিৎসক। তারা দু’জনেই খালেদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র, খালেদের ঘনিষ্ঠ একাধিক সহযোগীর জবানি এবং অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। প্রায় দুই মাস আগে খালেদ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হলেও তার অস্ত্রধারী ক্যাডারদের কেউ গ্রেফতার হয়নি। তার বিশাল অস্ত্রভাণ্ডারও এখন পর্যন্ত অক্ষত।

এই খালেদই শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টায় অংশ নেন। তবে মৃত দেখিয়ে অভিযোগপত্র থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খালেদ মারা যাননি।

১৯৮৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নেতাদের নেতৃত্বে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে হামলা হয়। ওই হামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহম্মদ মানিক, সৈয়দ নাজমুল মাহমুদ মুরাদ এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী খালেদ সরাসরি অংশ নেয়।

এ ঘটনার ৮ বছর পর মানিক-মুরাদের সঙ্গে খালেদের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তবে সূত্রাপুর থানার একটি হত্যা মামলার সূত্র উল্লেখ করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘খালেদ’ মারা গেছে। কখন, কীভাবে সে মারা গেছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

 

আরপি/ এএস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top