রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


অধ্যক্ষ লাঞ্ছিতের ঘটনায় পলিটেকনিকের ২৫ ছাত্র আটক


প্রকাশিত:
৩ নভেম্বর ২০১৯ ২০:৫২

আপডেট:
৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:১৮

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে (৫৪) তুলে নিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়ার ঘটনায় ২৫ ছাত্রকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। শনিবার রাত ১১টার দিকে তাদের থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। সিটিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে যাচাই বাছাই করার জন্য তাদের চন্দ্রিমা থানা হেফাজতে নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন ওসি শেখ গোলাম মোস্তফা।

এ আগে অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়ার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়। অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ বাদি হয়ে চন্দ্রিমা থানায় দায়ের করা মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ ৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে বলে চন্দ্রিমার থানার ওসি শেখ গোলাম মোস্তফা।

তিনি বলেন, শনিবার রাত নয়টার দিকে অধ্যক্ষ মামলাটি দায়ের করেন। সিসিটিভির ভিডিও দেখে সাতজনের নাম পরিচয় নিশ্চিত করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান চলছে। অভিযানের অংশ হিসেবে পলিটেকনিকের ছাত্রবাস ও আশপাশের এলাকা থেকে ২৫ জনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। সিসিটিভি ভিডিও দেখে তাদের যাচাই বাছাই করা হবে বলে জানান ওসি।


অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন বলেন, ‘‘এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ঘটনার আগে তারা ছাত্রলীগের টেন্টে বসে ছিল। সেখান থেকে এসে তারা আমাকে তুলে নিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। এ ছাড়াও এর আগেও ছাত্রলীগ পরিচয়ে তারা একাধিক বার তার সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরে। সেসব দাবি না মানায় তারা আমার উপর ক্ষুদ্ধ ছিল।’’

এদিকে, কলেজ সূত্রে জানা গেছে, যার নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটনো হয়েছে তার নাম কামাল হোসেন সৌরভ। সে কম্পিউটার সাইন্স বিভাগের অষ্ঠম পর্বের ছাত্র। তার সঙ্গে ছিল ইলেকট্রনিক্স বিভাগের সপ্তম পর্বের ছাত্র মুরাদ, পাওয়ার বিভাগের সাবেক ছাত্র শান্ত, ইলেকট্রনিক্স বিভাগের সাবেক ছাত্র বনি, ম্যাকানিক্যাল বিভাগের সাবেক ছাত্র হাসিবুল, ইলেকট্রো মেডিকেলের সাবেক ছাত্র টনি, ইলেকট্রো মেডিকেল বিভাগের সপ্তম পর্বের ছাত্র হাসিবুল ও কম্পিউটার বিভাগের সাবেক ছাত্র মারুফ।

পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান রিগেন বলেন, কামাল হোসেন সৌরভ পলিটেকনিক ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। অন্যদের পদ না থাকলেও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে তারা সৌরভের অনুসারী।

রিগেন বলেন, পলিটেকনিকের এমন ঘটনা লজ্জাজনক। এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের যারা জড়িত তাদের দল থেকে বহিস্কার করা হবে। ইতোমধ্যেই বহিস্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে মহানগর কমিটিকে জানিয়েছি। মহানগর কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানোর কথা রয়েছে।

মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহামুদ হাসান রাজিব বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পলিটেকনিক ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে বহিস্কারসহ পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম স্থগিতের সুপারিক করে কেন্দ্রীয় সংসদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ঘটনাটি তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে নামাজ পড়ে অফিসে ফেরার সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে ধরে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। এর আগে সকালে তারা অধ্যক্ষের কাছে অনৈতিক দাবি না মানায় তারা অধ্যক্ষের উপর ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top