রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


ভারতে বৈধ দেশে অবৈধ এ মাদক আসছে চোরাইপথে

মাদকসেবীদের নতুন নেশা ‘ট্যাপেন্টাডল’


প্রকাশিত:
১৮ নভেম্বর ২০২০ ২২:০৪

আপডেট:
১৮ নভেম্বর ২০২০ ২২:০৬

দুই বছর আগে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হওয়া ‘ট্যাপেন্টাডল’ মাদকসেবীদের নতুন নেশার উপাদান হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়েছে। মাদক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে ট্যাপেন্টাডলের উৎপাদন ও বিক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এখন চোরাইপথে দেশে আসছে এ মাদক। জানা যায়, ব্যথ্যানাশক হিসেবে ব্যবহার হওয়া এ ওষুধটি মাদক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এটা সর্বপ্রথম নজরে আসে রাজশাহী বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের। তাঁরা বিভাগের নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা মাদকসেবীদের থেকে এ ট্যাপেন্টাডলের অবৈধ ব্যবহার সম্পর্কে জানাতে পারেন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে মন্ত্রণালয় এটিকে মাদক হিসেবে ঘোষণা করে।


জানা গেছে, ট্যাপেন্টাডল ও মিথাইল হাইড্রোক্লোরাইড জেনেরিক শ্রেণির এ ওষুধটি বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন নামে উৎপাদন করতো। ওষুধটি মাদকসেবীরা ব্যবহার শুরু করলে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়। অসাধু ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা বাড়তি দামে মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি শুরু করে। ওষুধ মাদক হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টি নজরে আসার পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ তে ‘ট্যাপেন্টাডল’কে ‘ক’ শ্রেণির ‘খ’ সিডিউলভুক্ত করা হয়।


রাজশাহী বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্ল্যাহ কাজল জানান, সাধারণত নিম্ন আয়ের মাদকসেবীরা ইয়াবা ও হেরোইনের বিকল্প হিসেবে এই ওষুধটি ব্যবহার করছে। ওষুধটি আগে খুচরা ৩০ টাকা পাতা (১০টি ট্যাবলেট) মূল্যে বিক্রি হতো। কিন্তু মাদক হিসেবে ব্যবহারের পর একটি ট্যাবলেট ৫০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


তিনি আরো জানান, বর্তমানে দেশে কোনো ওষুধ কোম্পানি ‘ট্যাপেন্টাডল’ এর উৎপাদন করছে না। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে ওষুধ হিসেবে এর উৎপাদন ও বিক্রয় করতে পারবে।


রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুল আলম বাদশা জানান, মাদকদ্রব্য মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব ফেলে। যেমন কোনো মাদক নার্ভকে উত্তেজিত করে, ঘুম ঘুম ভাব তৈরি করে, ঝিমুনিসহ অস্বাভাবিক অনুভূতি তৈরি করেÑ যেটাতে মাদকসেবীরা আনন্দবোধ করে।

এটা সময়িকভাবে তাদের সুখবোধ তৈরি করলেও পরবর্তীতে মারাত্মক ক্ষতির কালন হয়। আর মাদকসেবীরা মাদকের বিকল্প কিছু ওষুধের অবৈধ ব্যবহার করতে পারে। যেমন: উত্তেজক ওষুধ, ঘুমের ওষুধ। এগুলো অতিমাত্রায় খেলে নেশা হয়। তবে সব ওষুধে নেশা হয় না। আর ট্যাপেন্টাডল ব্যথ্যানাশক হিসেবে ব্যবহার হতো।


তিনি আরো জানান, বাংলাদেশে দুই ধরনের ব্যথ্যানাশক ব্যবহার করা হয়। একটা সাধারণ ব্যথ্যানাশক ওষুধ- আরেকটা মরফিন জাতীয়। সাধারণ যেমন- প্যারাসিট্যামল, নেট্রোক্সেন এগুলোতে নেশা হয় না। মরফিন জাতীয় কিছু ব্যথ্যানাশকে নেশা হতে পারে।


এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, দেশে এ ওষুধটিকে মাদক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় ভারত থেকে এ ওষুধটি এখন চোরাইপথে আসছে। মাদকের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর তৎপরতা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে এই বিপুল পরিমাণ নতুন মাদকসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়।#

 

আরপি/ এমআই 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top