আজ বেগম রোকেয়া দিবস
![ফাইল ছবি](https://rajshahipost.com/uploads/shares/69897-2021-12-09-08-58-23.jpg)
আজ বেগম রোকেয়া দিবস। জাতীয় এই দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার আলাদা বাণী দিয়েছেন। এ ছাড়া করোনা মহামারীকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিবসটি উদযাপনের লক্ষে দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রকাশ করা হচ্ছে বিশেষ ক্রোড়পত্র, পোস্টার, বুকলেট ও স্যুভেনির।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া শুধু নারী শিক্ষার অগ্রদূতই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী নিবেদিতপ্রাণ একজন সমাজকর্মী। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে বেগম রোকেয়া তার শানিত অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন যে, সমাজে নারীর অধস্তন অবস্থা নারী উন্নয়নের পথে প্রধান অন্তরায়। তাই তার চিন্তা-ভাবনা-উদ্বেগ সর্বক্ষণ আবর্তিত ছিল নারী জাগরণ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে।
আরও পড়ুন: অপ্রতিরোধ্য রোজিনার পাশে রাজশাহী কলেজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, বেগম রোকেয়া ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী। তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়া উপলব্ধি করেছিলেন সমাজ তথা রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। তার এই উপলব্ধি ও আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়।’
নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শকে সামনে রেখে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য প্রতিবছর এ দিনে ‘বেগম রোকেয়া পদক’ প্রদান করা হয়। এবার দেশের পাঁচ নারী পাচ্ছেন এ পদক। আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার কাছ থেকে তারা সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন।
পদকপ্রাপ্তরা হলেন নারী শিক্ষায় অবদানের ক্ষেত্রে কুমিল্লার অধ্যাপক হাসিনা জাকারিয়া বেলা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় যশোরের অর্চনা বিশ্বাস, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় কুমিল্লার শামসুন্নাহার রহমান পরান (মরণোত্তর), পল্লী উন্নয়নে অবদান রাখায় কুষ্টিয়ার গবেষক ড. সারিয়া সুলতানা এবং সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণে অবদান রাখায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা। জিনাত হুদার নিজ জেলা মুন্সীগঞ্জ।
আরও পড়ুন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী আরও ১৩৮৩ জন
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় মুসলিম সমাজে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর কোনো চল ছিল না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও পরিবারের সবার অগোচরে তার বড় ভাইয়ের কাছে উর্দু, বাংলা, আরবি ও ফারসি পড়তে এবং লিখতে শেখেন। তার জীবনে শিক্ষালাভ ও মূল্যবোধ গঠনে তার ভাই ও বড় বোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। পরে বিহারের ভাগলপুরের সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামীর উৎসাহে ও নিজের আগ্রহে তিনি লেখাপড়ার প্রসার ঘটান। বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মারা যান।
২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’ জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম রোকেয়া। তিনি প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক হিসেবে পরিচিত। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হলো মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধ-বাসিনী।
আরপি/এসআর-০৪
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: