ধামইরহাটে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, দুর্ঘটনার আশঙ্কা
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার রাস্তাঘাটের আশেপাশে দোকানে, বাজার এলাকা, সড়কের মোড়সহ যেখানে সেখানে বিক্রি হচ্ছে পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার ও পেট্রলসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ। এতে দিন দিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
উপজেলার ধামইরহাট বাজার, আমাইতাড়া, ফার্সিপাড়া, হরিতকি ডাঙ্গা, মঙ্গলবাড়ী বাজারসহ গ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অবাধে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার পেট্রলসহ নানা দাহ্য পদার্থ। খোলা বাজারের বিভিন্ন দোকানে দু’ই এক লিটার অথবা আধা লিটার ওজনের প্লাস্টিকের বোতলে পেট্রল ভরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যাতে করে যে কেউ ইচ্ছা করলেই পছন্দ মত বোতলভর্তি পেট্রল কিনতে পারেন।
শুধু তাই নয়, দোকানের সামনে খোলা আকাশের নিচে ঝড় বৃষ্টি ও রোদরে মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার পেট্রলসহ নানা দাহ্য পদার্থ হরহামেসা বিক্রয় করতে দেখা গেছে। দু’একটি ডিলার ছাড়া স্থায়ী বা উঠতি দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা-সংক্রান্ত লাইলেন্স নিরাপত্তা সরঞ্জামসহ অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার নেই। এতে করে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের কোন দূর্ঘটনা ঘটলে জান মালের নিরাপত্তা দেওয়া দুরুহ হয়ে পরবে বলে মনে করেন সুধি মহল।
অথচ দাহ্য পদার্থ বিক্রি করতে হলে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের নিবন্ধনসহ অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা থাকা বাধ্যতামূলক হলেও এসব দোকানে সরকারি নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের নাকের ডগায় দেদারসে বিক্রয় করছে এসব দাহ্য পদার্থ।
রাজশাহী বিভাগীয় বিস্ফোরক পরিদপ্তর (রাজশাহী-রংপুর) কর্মকর্তা ড. আসাদুল ইসলাম জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক গ্যাস সিলিন্ডার, পেট্রল, মবিল বিক্রির জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধাপাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা-সংক্রান্ত লাইলেন্সসহ অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। একজন ব্যবসায়ী এসব শর্ত পূরণ করলেই কেবল বিস্ফোরক দ্রব্য বিক্রির নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। লাইসেন্স ছাড়া কোনো দোকানে দাহ্য পদার্থ বিক্রি করা যাবে না। আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্থানীয় যুবনেতা আবু ইউসুফ মুর্তজা জানান, এ উপজেলার বিভিন্ন দোকানে খোলা আকাশের নিচে দাহ্য পদার্থ বিক্রির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। অনেকে কোমল পানীয়র বোতলে ভরে পেট্রল বিক্রি করছেন। অনুমোদনহীন এসব দোকানের কারনে পার্শবর্তী দোকানদার ও সাধারণ জনগন দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন। বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সারাদিনে দু-একটা সিলিন্ডার বিক্রি করি। এ আইন সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। লোকজনের চাহিদা থাকায় ডিলারদের কাছ থেকে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে এসে বিক্রি করি।
স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ী মনোজ কুমার সাহা বলেন, নজিপুরের ডিলাররা বিভিন্ন কোম্পানির (নাভানা, ওমারা, জি গ্যাস) গ্যাস সিলিন্ডার আমাদের কাছে এনে বিক্রয় করেন। আমরা তাদের কাছ থেকে কিনে কাষ্টমারদের কাছে বিক্রি করি।
এ বিষয়ে আমাইতাড়া বাজারের বসুন্ধরা গ্যাস কোম্পানির ডিলার মন্ডল ট্রেডার্স’র আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গ্যাস যারা বিক্রি করেন তাদের অবশ্যয় ফায়ার লাইসেন্স থাকতে হবে। যাদের লাইসেন্স আছে আমরা শুধু তাদেরকেই মাল দিই। এ খেত্রে যদি দু’এক জনের লাইসেন্স না থাকে তার দায় দ্বায়িত্ব আমারা নেইনা, তার দায় দ্বায়িত্ব তাকেই নিতে হবে।
নওগাঁ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন লিডার নুরুল ইসলাম বাবু জানান, যাদের অনুমোদন আছে তারাই শুধু এলপি গ্যাস সিলিন্ডার পেট্রলসহ দাহ্য পদার্থ বিক্রয় করতে পারবেন। অন্যথায় আইনত দন্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচ্চ হবে।
আরপি/আআ
বিষয়: ধামইরহাট গ্যাস সিলিন্ডার দুর্ঘটনা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: