রাজশাহী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১


বদলগাছীর ছোট যমুনায় বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে ফসলি জমি


প্রকাশিত:
২৯ জুন ২০২০ ০২:১৩

আপডেট:
৪ মে ২০২৪ ০০:২৯

ছবি: বদলগাছীর ছোট যমুনায় বালু উত্তোলন

নওগাঁর বদলগাছীতে ছোট যমুনা নদীর বালু মহালে নির্দিষ্ট দূরুত্ব না রেখে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির নিচ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমিসহ নদীর দুই পাড়ের বাঁধের রাস্তা। বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন কৃষকরা।

জানা গেছে, বদলগাছী উপজেলার ছোট যমুনা নদীর পূর্ব পাশে ডাঙ্গীসারা মৌজায় গত ২২ জুন থেকে বালু উত্তোলন করছেন বালু ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন, শাহিন ও হিরু সহ কয়েকজন। তাদের দাবি, জেলার ধামইরহাট উপজেলার মফিজ উদ্দিনের কাছ থেকে এ বছর সাবলিজ নিয়েছেন। ফসলি জমি রক্ষায় ড্রেজার মেশিন স্থাপনের দিনে এলাকাবাসী বাঁধা দিলেও কোন রক্ষা হয়নি।

যেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তার আশেপাশে অনেক ফসলি জমি রয়েছে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে গভীর করে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি। এছাড়া বালু বহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর চললে নদীর দুই পাড়ের বাঁধের রাস্তাও পড়বে ব্যাপক হুমকির মুখে।

বালু মহল সাবলিজ নেয়াদের মধ্যে একজন ফারুক হোসেন বলেন, আমরা কয়েকজন মূল ইজারাদারের কাছ থেকে বালু মহালটি সাবলিজ নিয়েছি। এখানে প্রায় ৭৫ বিঘার মতো সরকারি জায়গা রয়েছে। আশপাশের লোকজন ও কৃষকদের বুঝিয়েছি। কারো জমি থেকে ক্ষতি করে বালু তোলা হচ্ছেনা।

মুক্তিযোদ্ধা সুলতান রেজা খান বলেন, গত কয়েকদিন থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে আমি ঢাকায় থাকায় বিষয়টি বুঝতে পারিনি। যেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সেটা সরকারি জমি এবং আমার জমির আইলের নীচে। কোন দূরুত্ব না রেখে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এইভাবে যদি বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে আমার জমিটা বিলীন হয়ে যাবে। এতে আমার প্রায় পৌনে দুই বিঘা ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাবে।

চকজয়দেব গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন ও রনিসহ কয়েকজন বলেন, কোন নিয়মকানুন না মেনে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির নিচ থেকেই বালু উঠানো হচ্ছে। আগে কখনোই এভাবে এখান থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উঠানো হয়নি। আর এভাবে বালু উঠানো হলে ফসলি জমির ধস নেমে যাবে।

এ জমিগুলোতে আলু, পটল ও পাটের আবাদ হয়ে থাকে। ড্রেজার মেশিন নিয়ে আসার পর এলাকাবাসীরা বাঁধা দিয়েছিল কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তারা জোরপূর্বক সেখানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তুলছে। বালু বহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর চলাচলে বাঁধের রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে। গত বছর বন্যার সময় বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ন ছিল।

ডাঙ্গীসারা গ্রামের গাজি রহমান বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে আমরা ভাগিরা মিলে দুই একর সরকারি জমি চেক কেটে খাচ্ছিলাম। এবছর শুনছি ওই জায়গাটি সরকার থেকে বালু মহালের জন্য ইজারা দিয়েছে। এজন্য এবছর আর চেক কাটিনি।

বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু তাহির বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সম্প্রতি বালুমহাল গুলো ইজারা প্রদান করা হয়েছে। তবে বালুমহালের যে নির্দিষ্ট বেড়িফেরি রয়েছে সেখান থেকেই বালু উঠানোর নিয়ম। যদি কেউ এর অনিয়ম করে থাকে তাহলে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে জরিপ করে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

আরপি/আআ-১০

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top