রাজশাহী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


মান্দায় অধ্যক্ষের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন


প্রকাশিত:
২৮ অক্টোবর ২০২২ ০২:৪০

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১১:১৭

নওগাঁর মান্দায় অধ্যক্ষের নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য প্রতিষ্ঠান ছুটির পর বিকেল সাড়ে ৪ টায় স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করানোর অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার (২৬ অক্টোবর) নুরুল্যাবাদ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলে রাব্বী তারেক বালু মহাল ইজারাদারের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ঘটা করে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আটকিয়ে রেখে মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

জানা গেছে, বাংলা ১৪২৯ সনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আত্রাই নদীর ভাটি অংশের বালুমহাল ইজারার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। এতে ৭৩ লাখ ২৫ হাজার ৭৫০ টাকায় এ বালুমহাল ইজারা নেন নাকিব এন্টারপ্রাইজ স্বত্বাধিকারী রহমত আলী মোল্যা। ইজারাদার তার বালু মহালের কালেন্ডারভূক্ত নুরুল্যাবাদ মৌজার ৩৭৫০,৩৮৪৮,৫৭,৫৮ ও ৫৯ দাগের জায়গা থেকে নিয়ম মেনে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। বালু পয়েন্টের অদূরে রাস্তার পাশে স্কুল থাকার সুবাদে ইজারাদারের কাছে থেকে মোটা অংকের আর্থিক সহায়তা চেয়ে আসছিলেন অধ্যক্ষ ফজলে রাব্বী তারেক । একই সাথে ইজারাদারকে বেকায়দায় ফেলতে লিজকৃত নদীর জায়গাতে জোরপূর্বকভাবে আম গাছ রোপন করেন অধ্যক্ষ । ফায়দা হাসিলে ব্যর্থ হয়ে অধ্যক্ষ তার নিজ স্কুলের শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করেন। পরিকল্পিত মানববন্ধনে অধ্যক্ষ ফজলে রাব্বী অচিরেই নুরুল্যাবাদ মৌজার থেকে প্রশাসনের দেওয়া লিজকৃত জায়গায় বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে নুরুল্যাবাদ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলে রাব্বী তারেকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বছর নদীর লিজকৃত জমিতে আম গাছ রোপণ করেছি। ইজারাদার সেই বাগানের পাশ থেকে বালু উত্তোলন করছে। এই বালু উত্তোলন বন্ধ করতে স্কুল ছুটির পর শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধন করেছি । তিনি আরও বলেন আম গাছের চারা নদীর জমিতে লাগানো হয়েছে। তবে আর্থিক সহায়তা চাওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা বলেন, নদীর ধারে তারেক স্যারের আম বাগান ও সোহেল স্যারের কলার গাছের পাশ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে স্কুল ছুটির পর স্যার আমাদেরকে দিয়ে মানববন্ধন করিয়েছে। এর পর আমরা বাড়ি চলে যায়।

ইজারাদার রহমত আলী মোল্ল্যা বলেন,আমরা গত বছরও বালু উত্তোলন করেছি। এবছর প্রতিষ্ঠান প্রধান আমার কাছে ঘুরে ঘুরে সুবিধা আদায়ে বার্থ্য হয়ে ও জেলা প্রশাসক বরাবর তার নামে দুইটা অভিযোগ করার কারণে স্কুল ছুটির পর শিক্ষার্থী দিয়ে মানববন্ধন করেছেন। আমি নিয়ম মেনে লিজকৃত জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করছি।

নুরুল্ল্যাবাদ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের সভাপতি আইয়ুব আলী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কি কারণে অধ্যক্ষ স্কুল শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করিয়েছেন তা আমার জানা নেই এবং এই বিষয়ে আমাকে অবগত করেননি। এছাড়া আমার জানা মতে নদীর পাড়ে স্কুলের কোন জমি নেই।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, অধ্যক্ষ যদি নিজ স্বার্থে স্কুল শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করে থাকেন তাহলে অন্যায় করেছেন। এরকম করে থাকলে তদন্তে করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরপি/এসএডি-02



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top