রাজশাহী মঙ্গলবার, ১৪ই মে ২০২৪, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


পত্নীতলার বাজার থেকে বেক্সিমকোর নাপা উধাও


প্রকাশিত:
২৯ জুন ২০২১ ২৩:৪৮

আপডেট:
১৪ মে ২০২৪ ১৯:১৭

ছবি: প্রতিনিধি

নওগাঁর পত্নীতলাসদর ও নজিপুর পৌরসভার বাজার থেকে হঠাৎ বেক্সিমকোর নাপা উধাও হয়ে গেছে। সাধারণ জ্বর নিরাময়কারী ওষুধ নাপা। বেক্সিমকো কোম্পানির নাপা, নাপা এক্সট্রা, এক্সটেন্ড ও সিরাপ গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন ওষুধের দোকানদার ও গ্রাহকরা।

চাহিদা অনুযায়ী ঠান্ডা, জ্বরের ওষুধ নাপা গ্রুপের কোন ওষুধ চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকটি ওষুধের দোকানদার এমন তথ্য জানিয়েছেন। ফলে সাধারণ মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। এছাড়া নওগাঁ জেলায় করোনার অত্যধিক প্রকোপে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশির ওষুধের চাহিদাও বেড়েছে ব্যাপক হারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহর ও গ্রামের মানুষ ঠান্ডা-গরম লাগার কারণে ঘরে ঘরে জ্বর, খুসখুসে কাঁশি ও ঠান্ডা-গরমে আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের কাছে গেলে জ্বরের জন্য নাপা, ঠান্ডা-গরম লাগলে ফেকসো খেতে বলছেন। অথচ বাজারে চাহিদা অনুযায়ী ফেকসো ওষুধ পাওয়া গেলেও বেক্সিমকো কোম্পানির নাপা গ্রুপের কোন ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। দূরদুরান্তের মানুষ ওষুধ কিনতে এসে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। ওষুধ না পাওয়ায় তাদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

নজিপুর ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী জানান, বাড়ির সবার ঠান্ডা, জ্বর যাদের বা যাদের পরিবারে আছে তারা ছাড়াও করোনার ভয়ে অনেকে নিয়মিত বেক্সিমকো গ্রুপের তিন ফর্মূলার ওষুধই কিনছেন।সকলে পাতা আকারে কিনছেন। মিলছেনা ডাক্তার প্রেসক্রিপশন করা জ্বরের আরেক ওষুধ রিসেটও।

রাশেদুল নামে এক ক্রেতা জানান ,কয়েক দিন ধরে জ্বর ও নাক দিয়ে পানি পড়ছে তাই নাপা কিনতে এসেছিলাম। কোন ফার্মেসিতে পাই নি। তবে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ নাপার প্রতি এতো চাহিদা কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনলাইনে করোনার জরুরি ওষুধের মধ্যে নাপার নাম দেখেছেন। একারণে নাপা কিনতে এসেছেন তিনি।

বাদল নামে আরেক ক্রেতা বলেন সাধারণ জ্বরে নাপা বা নাপা এক্সট্রা সেবন করি এটা আমি ও আমার পরিবার দীর্ঘদিন ব্যবহার করছি এবং তাতে সেরে যায়, তাই নাপার প্রতি একটা আস্থা বা বিশ্বাস আছে। দুর্যোগময় সময়ে যদি ওষুধ পাওয়া না যায় তাহলে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কিছুই না।

ফার্মেসির মালিকরা বলেন, নাপা ওষুধ মানুষ বেশি খাচ্ছে। এ কারণে এই কোম্পানির নাপা ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে নাপা নেই। কোম্পানি সাপ্লাই দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। অন্যান্য কোম্পানির প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দোকানে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

তবে প্যারাসিটামল জাতীয় অন্যান্য ওষুধ বাজারে থাকলেও শুধু নাপা কিনতে ক্রেতারা এতো ভিড় করছেন কেন তার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ফার্মেসি মালিকরা।

এ বিষয়ে বেক্সিমকো কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি প্রণয় দাস বলেন, শুধু পত্নীতলা বা নওগাঁ নয়, গত ১০ দিন ধরে দেশের সব জেলায় নাপার সরবরাহ কম রয়েছে। কোম্পানির কাছে নাপার কাঁচামালের সরবরাহ কম থাকার কারণে ও ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এমন সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে গোপন তথ্য রয়েছে পৌরসভার ঠুকনিপাড়া মোড়সহ আরো দু একটি দোকান চড়া মূল্যে মজুদ থাকা ওষুধ বিক্রয় করছেন। এর পূর্বে বাজারে স্যাভলনের সংকট দেখা দিলে, গোপনে অনেকে স্যাভলন মজুদ রেখেছিলেন। দাম বেশি রেখে সেগুলো বেশি দামে বিক্রি করায় নওগাঁ ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর শহরের জান্নাত মেডিকেল ষ্টোরে জরিমানাসহ আরো কয়েকটি ফার্মেসিতে অভিযান চালায়।

ডা. আরিফ বিল্লাহ বলেন, বাজারে যদি নাপা ওষুধের সংকট দেখা দেয় তাহলে প্যারাসিটামল বা অন্য কোম্পানির ওষুধ খেতে পারবে। তাতে জ্বর বা ঠান্ডা-গরম লাগলে ভালো হয়ে যাবে। এছাড়া এক সপ্তাহে ভালো না হলে রক্তের পরীক্ষা ও করোনা টেস্ট করাতে হবে। অন্যান্য উপসর্গগুলোও লক্ষ্য করতে হবে।



আরপি/এসআর-১৯



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top